আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে বলেই বিএনপি স্বাধীনভাবে মিছিল, মিটিং করতে পারছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিলে আওয়ামী লীগ বাধা দেবে না। তবে আন্দোলনের নামে সহিংসতা কিংবা হেফাজত ইসলামের মতো তাণ্ডব করলে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতকে যেভাবে দমন করা হয়েছে, বিএনপিকে সেভাবে দমন করা হবে।
শুক্রবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের রুদ্ধদ্বার সভায় বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা এমন বার্তা দেন। তাকে উদ্ধৃত করে বৈঠকে উপস্থিত থাকা একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা এ তথ্য জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি আজকে স্বাধীনভাবে মিটিং করতে পারছে, মিছিলও করতে পারছে, সবই করতে পারছে। কিন্তু যে সমস্ত আসামি, যারা অগ্নি সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত। যারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে। রেল, বাস, গাড়ি, সিএনজি, লঞ্চে আগুন দিয়েছিল। কোনো জায়গা বাদ ছিল না। প্রত্যেক জায়গায় আগুন দিয়ে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। যারা এই খুনের সঙ্গে জড়িত, অগ্নি সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত। আমি জানি তারা অনেকেই লুকিয়ে ছিল। এখন বিএনপি মাঠে নেমেছে, তারা মাঠে নামবে। কিন্তু এই সমস্ত আসামিদের ধরতে হবে এবং তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।’
উপস্থিত নেতারা বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, ওই নির্বাচনে শেখ হাসিনা পাস করাবেন এই ধারণা নিয়ে বসে থাকলে হবে না। এবারের নির্বাচনে সবাইকে নিজের যোগ্যতায় জিতে আসতে হবে। দলীয় এমপিদের এলাকায় কার কী অবস্থা, তা জানতে জরিপ চলছে জানিয়ে দলীয় সভাপতি বলেন, এমপিরা কর্মগুণে মনোনয়ন পাবেন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে আসা এমপিরা নির্বাচন কী তা বোঝেন না, তাদের বুঝতে হবে।
দেশে আওয়ামী লীগই একমাত্র দল যারা গঠনতন্ত্র মেনে চলে উল্লেখ করে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরই মধ্যে অনেকগুলো জেলা হয়ে গেছে। কয়েকটি জেলাতো পূর্ণাঙ্গ কমিটিও দিয়েছে। যেসব জেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়ে গেছে, সেখানে আমি জনসভা করব। পাশাপাশি আমি নেতা কর্মীদের সঙ্গেও বৈঠক করব। সেটাও আমি প্ল্যান নিয়েছি। নভেম্বরের মাঝামাঝি বা ডিসেম্বর থেকে তা শুরু করব।’
আগামী ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সম্মেলন সাদামাটাভাবে করা হবে উল্লেখ করে সম্মেলন উপলক্ষে প্রস্তুতি কমিটিসহ উপকমিটি করার জন্য নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখি যেহেতু অর্থনৈতিক মন্দা যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী। আমাদের দেশেও সেই অবস্থা। এবারের সম্মেলন আমরা শানশওকত করে করব না। খুব সীমিত আকারে অল্প খরচে সাদাসিধেভাবে আমাদের সম্মেলনটা করতে হবে।’ সম্মেলনের খরচ খুব সীমিত হয় এবং মানুষের কষ্ট না হয় সেই দিকে খেয়াল রাখার নির্দেশনা দেন তিনি।