সাত শিশুকে হত্যা এবং আরো ১০ শিশুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ব্রিটেনে লুসি লেটবি (৩২) নামের এক নার্সের বিচার শুরু হয়েছে। ইংল্যান্ডের উত্তর-পশ্চিম চেস্টারের কাউন্টেস অব চেস্টার হাসপাতালে তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। গতকাল সোমবার ম্যানচেস্টার ক্রাউন আদালতে বিচারকাজ শুরু হয়। খবর এএফপির।
অভিযোগ, ২০১৫ সালের জুন থেকে ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে পাঁচটি ছেলেশিশু এবং দুটি মেয়েশিশুকে হত্যা করেছেন লুসি। এ ছাড়া আরো পাঁচটি ছেলেশিশু এবং পাঁচটি মেয়েশিশুকে হত্যাচেষ্টা করেছেন তিনি। তবে লুসি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মামলা নেওয়ার সময় আইনজীবী নিক জনসন বলেছিলেন, হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যুর হার দেশের অন্যান্য জায়গার সাথে তুলনীয় ছিল। কিন্তু ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ১৮ মাসেরও বেশি সময় ধরে মৃত্যুর সংখ্যা ‘উল্লেখযোগ্য’ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
তারপর তদন্তে দেখা যায়, শিশুদের মারা যাওয়ার ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লুসি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি রাতের শিফটে কাজ করার সময় নবজাতকদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
আইনজীবীদের দাবি, কোনো শিশুরই মৃত্যু কিংবা অসুস্থতার কারণ দুর্ঘটনা নয়। মারা যাওয়া শিশুদের কয়েকজনকে বাতাস ভরা ইনজেকশন দিয়েছেন লুসি এবং অন্যদের ইনসুলিন বা খুব বেশি দুধ খাওয়ানো হয়েছিল বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।
জানা গেছে, লুসির বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে ২২টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে সাতটি হত্যার এবং ১৫টি হত্যাচেষ্টার। কারণ তিনি কিছু শিশুকে একাধিকবার হত্যার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আদালতে দেওয়া বর্ণনা অনুসারে, লুসির খুনের শিকারদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ হলো অকালে জন্ম নেওয়া এক দিন বয়সী এক শিশু। সে ২০১৫ সালের ৮ জুন লুসি ডিউটিতে আসার ৯০ মিনিটের মধ্যে মারা যায়।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তার মৃত্যুর কয়েক মিনিট আগে তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে বাতাস বা অন্য কিছুর ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল। এই শিশুটির ত্বকের বিবর্ণতা দেখা গিয়েছিল, যা অন্যদের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে।
এর কয়েক ঘণ্টা পর লুসি ওই শিশুটির যমজ বোনকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।