পাবনা মানসিক হাসপাতালে রোগীর সুস্থতায় ওষুধ সেবনের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক থেরাপির মাধ্যমে কার্যকর চিকিৎসাসেবা প্রদানের গবেষণামূলক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. ইসরাফিল শাহীনের তত্ত্বাবধানে ওই বিভাগের প্রথম বর্ষের পাঁচজন শিক্ষার্থী পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে গবেষণামূলক সাংস্কৃতিক থেরাপি প্রয়োগের এই উদ্যোগ নেন।
ওই পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন- ফজলে নাভিদ অনন, তানভীর নেওয়াজ তীর্থ, জান্নাতুল মাওয়া নিবিড়, ফারজানা আফরিন মিম ও সিঁথি ইষ্রা রিছিল।
গত রোববার ও সোমবার দিনভর ওই পাঁচজন শিক্ষার্থী হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাফফাত ওয়াহিদ, মেডিকেল অফিসার ডা. শফিকুল আযম জিকো এবং সাইক্রিয়াট্রিক সোশ্যাল ওয়ার্কার মোজাহার আলীসহ হাসপাতালের বহির্বিভাগ এবং আন্ত:বিভাগের চিকিৎসকদের সঙ্গে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের রোগের ধরণভেদে তিনটি সাংস্কৃতিক থেরাপির প্রয়োগের মাধ্যমে ব্যতিক্রম এই চিকিৎসাসেবা প্রদানের বিষয়ে গবেষণা করেন।
থেরাপি তিনটি হলো- আর্ট থেরাপি, ড্রামা থেরাপি ও মিউজিক থেরাপি। মূলত মানসিক রোগীর আক্রান্তের ধরণভেদে ওই তিনটি সাংস্কৃতিক থেরাপি প্রয়োগ করে রোগীর মানসিক বিষন্নতা ও জড়তা দূর তথা ভিতরের অব্যক্ত চাপা প্রতিভা বিকাশ ঘটিয়ে সুস্থ করে তোলা।
সাংস্কৃতিক থেরাপি প্রয়োগের গবেষণা চর্চায় নিয়োজিত ওই পাঁচ শিক্ষার্থী জানান, তারা সরাসরি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে আর্ট থেরাপি, ড্রামা থেরাপি এবং মিউজিক থেরাপি প্রয়োগ করে আশার আলো দেখতে পেয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে তারা বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিছু মানসিক রোগী আছেন যাদের সামনে বিভিন্ন ধরনের শৈল্পিক আর্ট উপস্থাপন, কিছু রোগী আছেন যাদের সামনে চিত্তাকর্ষণমূলক ড্রামা প্রদর্শন, আবার কিছু রোগী আছেন যাদের সামনে মনমুগ্ধকর মিউজিক বাজালে তারা বেশ উৎফুল্ল, উদ্বেলিত এবং মানসিক স্বস্তি বোধ করেন।
তাছাড়া, তারা ওই থেরাপির মাধ্যমে তাদের অতীত জীবনের অনেক প্রত্যাশা আর প্রাপ্তিও খুঁজে পান। সেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. ইসরাফিল শাহীন এবং ওই পাঁচ শিক্ষার্থী মনে করেন, মানসিক রোগীর সুস্থতায় ওষুধ সেবনের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক থেরাপি কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।
এ ব্যাপারে পাবনা মানসিক হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. শফিকুল আজম জিকো বলেন, মানসিক রোগ নিরাময়ে সাংস্কৃতিক থেরাপি একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। সুতরাং এই উদ্যোগটি সফল করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।