৫৩ বছর বয়সী মা নাদিরা বেগমকে বিয়ে দিয়েছেন তার দুই মেয়ে। এর আগে ২৮ বছর সংসার করেছেন তিনি। পাঁচ বছর আগে স্বামী মো. রুহুল আমিন আত্মহত্যা করলে কোনোরকমে সংসার চালিয়ে দুই মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ও মারিয়াম জ্বীমকে বড় করেন নাদিরা বেগম। এরপর বড় মেয়ে জান্নাতুলের বিয়ে পর সে ছোট বোন মারিয়ামকে নিজের কাছে নিয়ে আসেন। এতে একা হয়ে পড়েন মা। একাকীত্বের কথা ভেবে তারা সিদ্ধান্ত নেন, মাকে বিয়ে দেবেন। মাত্র দুই মাসের চেষ্টায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর ৬২ বছর বয়সী মো. হান্নান খানের সঙ্গে মা নাদিরা বেগমের বিয়ে দেন ।
রাজধানীর মিরপুরে স্বপ্ননগর আবাসিক এলাকায় বাসাতে পরিবারের সদস্য ও মেয়েদের বন্ধুবান্ধবের উপস্থিতিতে এই দম্পতির বিয়ে হয়।
মায়ের বিয়ের পর ফেসবুকে পোস্ট দেবেন কি না, তা নিয়েও অনেক ভেবেছেন জান্নাতুল। তবে সবাইকে তথ্যটি জানানোর জন্য ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন তিনি। ফেসবুক পোস্টে এত বেশি ইতিবাচক প্রচার দেখে নিজেরাই অবাক হয়েছেন। গণমাধ্যমকে মেয়ে জান্নাতুল বলেন, মায়ের বিয়ের পোস্টটি দেওয়ার পর থেকেই তা শেয়ার হতে থাকে। প্রায় সবই ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন। যারা নেতিবাচক মন্তব্য করছেন, তাকে কিছু বলতে হচ্ছে না, অন্য মন্তব্যকারীরাই প্রতিবাদ করছেন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর জান্নাতুল তার ফেসবুকের পোস্টে লিখেন, আজ আমাদের মায়ের বিয়ে। আমরা দুই বোন, আমার হাজব্যান্ড এবং পরিবারের কয়েকজন সদস্য মিলে হাসিমুখে আমার মায়ের বিয়ে দিয়েছি।…আজ আমরা আমার মাকে নতুন একটা সংসার দিলাম।
জান্নাতুল তার পোস্টে মায়ের কথা উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘একা বেঁচে থাকাটা একপ্রকার শাস্তি। আর এমন শাস্তি পাওয়ার মতো কোনো অন্যায় তো করেননি। তাহলে কেন শেষ সময়টা একা থাকবেন? কেন তাঁর পাশে কথা বলার একটা মানুষ থাকবেন না?’
বছরখানেক আগে জান্নাতুল ফেরদৌসের বিয়ে হয়েছে। জান্নাতুল জানান, তার বাবা মো.রুহুল আমিন ও মা নিজেরাই কাপড় সেলাই করতেন। ছোট একটি দোকানে কয়েকজন কারিগরও ছিলেন। তবে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ টাকা ঋণ হয়ে যায় বাবার। বাবা তা শোধ করতে পারছিলেন না। হতাশায় ২০১৭ সালে বাবা আত্মহত্যা করেন।