আমরা এমপি মন্ত্রী বানিয়েছি। কতবড় নেতা হইছেন এবার হইয়েন। দলের কথা বললে পিটনী খাবেন। সময় হলে সব বুঝবেন।’ এভাবে যুবলীগ নেতাকে শাসিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক উপ পরিদর্শক (এসআই)। মোস্তাফিজুর রহমান লালমনিরহাট সদর থানায় কর্মরত রয়েছেন। তিনি পাশ্ববর্তি জেলা কুড়িগ্রামের বাসিন্দা।
যুবলীগ নেতার সাথে মোবাইলে কথোপকথনের একপযায়ে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “যে দল করেন তার এমপি মন্ত্রী আমরা বানিয়েছি। এবার হইয়েন? কত বড় নেতা হইছেন এবার হইয়েন। দলের কথা বললে পিটনী খাবেন”। এসব কথা বলে শাসিয়েছেন বলে যুবলীগ নেতার অভিযোগ। তাদের কথোপকথনের একটি অডিও সংরক্ষিত রয়েছে।
জানা যায়, গত জুনে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়ন যুবলীগের সম্পাদক নুরবক্ত মিয়ার এক আত্মীয়ে মেয়ে (কিশোরী) অপহৃত হয়। এ ঘটনায় লালমনিরহাট সদর থানায় গত ২৬ জুন একটি মামলা দায়ের করে কিশোরীর পরিবার। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান থানার এসআই মোস্তাফিজা। তদন্তের এক পর্যয়ে কিশোরী ও অভিযুক্ত যুবকের সন্ধানে ঢাকার খিলগাও থানা এলাকায় অভিযান চালান তদন্ত কর্মকর্তা। সেখানে অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করা হয়। বাসে করে নিয়ে আসার সময় পথিমধ্যে রংপুরে যাত্রা বিরতী দেয়। পরে কিশোরীকে একা বাস থেকে নামিয়ে নির্জনে নিয়ে কু-প্রস্তাব দেন তদন্ত কর্মকর্তা। এতে রাজি না হলে ক্ষিপ্ত হয়ে থানায় পৌছে ওই কিশোরীর যৌনাঙ্গে মরিচের গুড়া দেয়ার হুমকী দেন বলে অভিযোগ ওই কিশোরীর।
আরও জানা যায়, ঢাকা যাওয়া আসা খরচের ২০ হাজার টাকা দাবি করেন এসআই মোস্তাফিজুর রহমান। টাকা না দিলে কিশোরীকে যশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর হুমকী দেন। এক পর্যয়ে মেয়েকে ফিরে পেতে গরীব বাবা মা ১০হাজার টাকা যোগার করে তদন্ত কর্মকর্তাকে দিলে তবেই উদ্ধারকৃত অপহৃতা আদালতে পাঠানো হয়। টাকা দিতে বিলম্ব হওয়ায় কিশোরীকে থানার একটি কক্ষে রেখে পরিবারের সদস্যের আড়াল করে রাখেন।
আরও জানা যায়, লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়ন যুবলীগের সম্পাদক নুরবক্ত মিয়ার নিকট আত্নীয় এক কিশোরী অপহৃত হয়। এ ঘটনায় লালমনিরহাট সদর থানায় গত ২৬ জুন একটি অপহরন মামলা দায়ের করে কিশোরীর পরিবার। এ মামলা তদন্তের দায়িত্বপান সদর থানার উপ পরিদর্শক(এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান।
অপহৃতা কিশোরী বলেন, ফেরার সময় রংপুরে শুধু আমাকে বাস থেকে নামিয়ে নির্জনে নিয়ে কু প্রস্তাব দিয়েছে এবং থানায় ঢুকেই মরিচ গুড়া যৌনাঙ্গে লাগানোর হুমকী দেন ওই এসআই। তার মুখের ভাষাও খুবই জঘন্য। এসব বাহিরে বললে আমার মামলায় আমাকেই ফাঁসাতে চেয়েছে।
যুবলীগ নেতা নুরবক্ত বলেন, টাকার জন্য কিশোরীকে আমাদের সাথে দেখা করতে দেয়নি। বরংচ যশোর পাঠানোর হুমকী দেয়। দলের পরিচয় দিতেই তিনি রেগে গিয়ে দল নিয়েও বাজে মন্তব্য করেছেন। আওয়ামী লীগ নিয়ে বাজে মন্তব্য করায় এ পুলিশ অফিসারের শাস্তির দাবি জানান।
তবে তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে বিডি২৪লাইভের কথা হলে জানান, আমি এ সংক্রান্ত কোনো ঘটনা জানি না।এই ঘটনার সাথে আমি জড়িত না।
লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি তদন্ত) মোজাম্মেল হক বলেন, মামলা সংক্রান্ত কাজে কর্মস্থলের বাহিরে গেলে তার খরচ সরকারী ভাবে বহন করা হয়। বাদি বা কোন পক্ষের কাছে নেয়ার সুযোগ নেই। কারো কাছে জোর করে টাকা নেয়ার অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।