নির্যাতনের অভিযোগ এনে রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস বলেছেন, আমরা তাদের (সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা) কাছের মানুষ হতে পারিনি। তাই আমাদের নির্যাতন করা হচ্ছে।
শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে গণমাধ্যমের সামনে এসব কথা বলেন তিনি।
সভাপতি ও সম্পাদকের ন্যায়-অন্যায়গুলো আমরা যারা ধরিয়ে দেই তারাই শত্রু হয়ে গেছি। কারণে অকারণে আমাদের হেনস্তা করা হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি এই ঘটনার বিচার না হলে আমি সুইসাইড করব।
কী কারণে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূল সমস্যা হচ্ছে হলের পলিটিক্যাল (রাজনৈতিক) রুমগুলো। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক একচ্ছত্রভাবে হলের সিট বাণিজ্য করতে চান। যারা এর প্রতিবাদ করেছে তারাই তাদের শত্রু হয়ে গেছে।
ছাত্রলীগের ওপর মহলে বিষয়গুলো জানানোর পরও কোনো সুরাহা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি আমার জায়গা থেকে ছাত্রলীগের ওপর মহলে বিষয়গুলো জানিয়েছি। আর সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য তো ফোনই রিসিভ করেন না। তাদেরকে কীভাবে জানাব।
রাজিয়া হলে আমার রুমে হামলা করার সময় আমি সংশ্লিষ্ট হল সুপার সোমা ম্যাডামকে জানিয়েছি যেন তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নেন। এর আগেই গেট দিয়ে প্রবেশ করার সময়ই আমার ওপর হামলা হয়। হাতে ও শরীরে আঘাত পেয়েছি। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী যারা সেখানে ছিলেন তাদের দিয়ে আমাদের ওপর সম্মিলিত হামলা করা হয়েছে। এ সময় আমার বোনকেও আঘাত করা হয়েছে।
তবে জান্নাতুল ফেরদৌসকে কোনোরকম শারীরিক নির্যাতন করা হয়নি বলে দাবি করেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী সহ-সভাপতি রুকসানা আক্তার।
তিনি বলেন, জান্নাতুল ফেরদৌস সাধারণ শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হেনস্থা করেন। শিক্ষার্থীরাই তাকে সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করেছে। আর কোনো প্রকার শারীরিক নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেনি। এখানে উপস্থিত ম্যাডামরাও সেটি দেখেছেন।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সম্পাদক রাজিয়া সুলতানাকে কলেজে খুঁজে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
অপরদিকে এই ঘটনার সমাধান করতে রাত তিনটার দিকে ক্যাম্পাসে আসেন ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্ট্যাচার্য। এ সময় তিনি বিচারের দাবিতে মুখোমুখি অবস্থান নেওয়া উভয়পক্ষের সাথে কথা বলে সকালে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়ার জন্য বলেন। তবে রাতেই অধ্যক্ষের কাছে শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলেও জানা গেছে।