কুমিল্লায় ইউরোপের দেশ সাইপ্রাসের তালিকাভুক্ত অপরাধীসহ মানবপাচারকারী চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। চুক্তিভিত্তিক বিয়ের মাধ্যমে মানবপাচারে জড়িত ছিল এই চক্র। র্যাব-১১-এর পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার এ অভিযানের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়।
র্যাব-১১-এর (সিপিসি-২) কুমিল্লা কম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানান, রবিবার নগরীর জাঙ্গালিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।
অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়। গত ১০ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার দক্ষিণ উপজেলার উত্তর ধনাইতরী গ্রামের মো. দুলাল মিয়া র্যাব কার্যালয়ে এসে এই চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন দক্ষিণ উপজেলার মাটিয়ারা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে সোহেল মজুমদার (৩২), ইউনুস মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন (৪২) ও কাজী নুরুল ইসলামের ছেলে কাজী আবু নোমান (২৮)। এর মধ্যে সোহেল এই চক্রের হোতা।
মেজর মোহাম্মদ সাকিব আরো জানান, সাইপ্রাসে প্রবেশের পর সহজে ইউরোপে ঢোকার প্রলোভন দেখিয়ে দুলাল মিয়ার ছোট ভাই সাইফুলকে বিদেশ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন গ্রেপ্তার হওয়া জাকির। সাইফুলকে ইউরোপে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দুলালের কাছ থেকে তিন দফায় সাড়ে এগারো লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এই চক্র।
মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন আরো জানান, গত বৃহস্পতিবার মোস্তফা হামিদ খান নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, তাঁর ছোট ভাই মো. ইব্রাহীমের সঙ্গে তিন বছর আগে পরিচয় হয় সোহেলের। ইউরোপীয় কোনো এক নারীর সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক বিয়ের মাধ্যমে ইউরোপ পাঠিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এ কাজের জন্য সোহেল সাড়ে আট লাখ টাকা নেন। টাকা নেওয়ার পর যোগাযোগ বন্ধ করে দেন সোহেল। সর্বশেষ দেশে আসার পর গ্রেপ্তার হলেন সোহেল।
ওই র্যাব কর্মকর্তা আরো জানান, গ্রেপ্তার হওয়া সোহেল রোমানিয়া বা ইউরোপের অন্যান্য দেশের কোনো মেয়েকে টাকার বিনিময়ে চুক্তির মাধ্যমে বিয়ের ব্যবস্থা করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে পরিচিতি অর্জন করেন। এভাবে বেশ কয়েকজনকে ইউরোপে পাঠিয়েছেন সোহেল। ২০১৯ সালে সাইপ্রাস সরকার সোহেল ওরফে হাবিবুর রহমানকে (পাসপোর্ট নাম) তালিকাভুক্ত অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে। তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়া নথিপত্র, প্রতারণা ও মানি লন্ডারিং আইনে আটটি অভিযোগ ইস্যু করা হয়েছে।