আগস্ট ২১ তারিখে একাধিক বেনামী নিউজপোর্টাল থেকে “পুলিশ কর্মকর্তার বাড়ি থেকে পুঁতে রাখা ১০ তরুণীর লাশ উদ্ধার!” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সংবাদের ছবিতে দেখা যায় বাংলাদেশ পুলিশের ইউনিফর্ম পরিহিত কিছু পুলিশ মাথায় হেলমেট পরিহিত একজন ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। ইনসেটে একজন পুলিশ কর্মকর্তার ছবি সংযুক্ত করা হয়।
অপর কিছু নিউজপোর্টাল সংবাদের শিরোনামে উল্লেখ করে ঘটনাটি বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের।
সংবাদগুলো বিভিন্ন গ্রুপ ও ফেসবুক প্রোফাইলে কপি-পেস্ট ও শেয়ারের মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এই সংবাদগুলোর কোনকোনোটির লিংক ফেসবুকে ১ থেকে ৩ হাজারের উপর লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার পায়। সত্যতা যাচাই
সংবাদের শিরোনাম ও সংযুক্ত ছবিতে ঘটনাটি বাংলাদেশের বলে ধারণা দেওয়া হলেও সংবাদের ভিতরে দেখা যায় সংবাদটি মূলত মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদর-এর। শিরোনামে ১০ তরুণীর কথা বলা হলেও, সংবাদের ভিতরে দেখা যায় “সাত নারী ও তিন শিশু”-এর উল্লেখ। এই সংক্রান্ত সংবাদ প্রায় তিন মাস পূর্বে মে মাসের ১৬ তারিখে যুগান্তর ও বাংলা ট্রিবিউনে প্রকাশিত হয়।
দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর জানায়, ৫১ বছর বয়সি হুগো ওসোরিও চাভেজ ওসোরিও নামে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ১৩টি খুনের মামলার তদন্ত চলছে।
নিহতদের মধ্যে সাত বছরের এক মেয়েশিশু এবং ২ ও ৯ বছরের দুই ছেলেশিশু রয়েছে। ওই পুলিশ কর্মকর্তার বাড়ি থেকে আরও সাতটি কবরে পাওয়া লাশের বিষয়েও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ওই এলাকার অন্তত ২৫ জন নিখোঁজ আছেন।
এই খবরের সূত্র হিসেবে আলজাজিরাকে উল্লেখ করা হয়। আলজাজিরায় মে ১৫ তারিখে এই সংক্রান্ত একটি সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়।
ছবির সত্যতা: রিমান্ডে ডিবির বরখাস্ত ৫ কর্মকর্তা
বেনামী পোর্টালগুলোর সংবাদে সংযুক্ত ছবিটি বাংলাদেশের হলেও সংবাদের ঘটনাটির সাথে এর সম্পর্ক নেই। ছবিটি খোঁজ করা হলে সেটি প্রায় দুই সপ্তাহ আগে বাংলাদেশের ফেনী জেলার পৃথক একটি সংবাদে খুঁজে পাওয়া যায়।
সংবাদে উল্লেখ করা হয়, আগস্ট ৮ তারিখে ফেনী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গতিরোধ করে, জনৈক স্বর্ণ ব্যবসায়ী থেকে ২০টি স্বর্ণের বার ছিনিয়ে নেয়। গত মঙ্গলবার রাতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয় থেকে ওসি সাইফুল ইসলাম সহ ৬ পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই সংক্রান্ত দায়কৃত চলমান মামলায় আদালতে উপস্থাপনের সময় আলোচ্য ছবিটি ধারণ করা হয়।