পরিচ্ছন্নকর্মীর অ্যাকাউন্টে ৮৩ লাখ টাকা, তবুও চলতেন ভিক্ষা করে

সরকারি হাসপাতালে সল্প বেতনের পরিচ্ছন্নকর্মীর কাজ করতেন ধীরাজ। কিন্তু গোটা কর্মজীবনে কখনও তিনি ব্যাংক থেকে বেতনের কোনও টাকাই তোলেননি। সম্প্রতি তার মৃত্যুর পর সেই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে পাওয়া গেল ৭০ লাখ রুপি (প্রায় ৮৩ লাখ টাকা)। অথচ পথে পথে ভিক্ষা করে বেড়াতেন ধীরাজ। ভিক্ষার উপার্জন দিয়ে পেট চালাতেন।

ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, ভারতের প্রয়াগরাজের সরকারি হাসপাতালে ধীরাজের বাবাও সাফাই কর্মচারী হিসাবে কাজ করতেন। তার মৃত্যুর পর এই কাজটি পান ধীরাজ। হাসপাতালে ঝাঁট দিতেন তিনি। যথাসময়ে বেতনও পেতেন। কিন্তু সেই বেতন ছুঁয়েও দেখতেন না। আশ্চর্যজনক ভাবে ধীরাজের বাবাও একই ভাবে জীবন কাটিয়েছেন। কখনও বেতন ব্যাংক থেকে তোলেননি তিনিও।

ধীরাজ তার বাবার মতোই পথেঘাটে ঘুরে বেড়াতেন এবং পথচলতি মানুষজনের কাছে টাকার জন্য হাত পাততেন। চেয়েচিন্তে যা পেতেন তা দিয়েই নিজের পেট চালিয়ে নিতেন। ধীরাজের বাড়িতে রয়েছেন তার মাও। ৮০ বছরের প্রৌঢ়া পেনশন পেতেন নিয়মিত। সেই টাকা দিয়ে সংসার চলত তাদের।

ধীরাজের এই অকাল মৃত্যুর পর তার এক বন্ধু বলেছেন, ‘‘ধীরাজ কখনও ব্যাংক থেকে টাকা তোলেননি। ওর মায়ের পেনশনেই ওদের সংসার চলত। যদি কখনও ধীরাজের টাকার প্রয়োজন হত, তিনি বন্ধু-বান্ধব কিংবা অপরিচিত লোকজনের কাছ থেকেও টাকা চাইতেন।

এখন ওর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৭০ লাখের বেশি রুপি জমে গিয়েছে।’’ কয়েক মাস আগেই ধীরাজের এই স্বভাবের কথা জানাজানি হয়েছিল। সরকারি কর্মকর্তারা তার কাছে এ বিষয়ে জানতেও এসেছিলেন। ধীরাজের বন্ধু বলেন, ‘‘টাকার জন্যেই ধীরাজ বিয়েও করেননি। তিনি ভাবতেন বিয়ে করলে বৌ এসে সব টাকা শেষ করে দেবেন। এমনকি প্রতি বছর আয়করও দিতেন ধীরাজ।’’