বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অকৃত্রিম রয়েছে ভালোবাসা গাজীপুর মহানগরীর বাসিন্দা আবদুল আলিম মোল্লার। আর তাই তো প্রতি বছর ১৫ আগস্ট থেকে বিজোড় তারিখগুলোতে টানা ৪৬ বছর ধরে রোজা রেখে চলেছেন তিনি । মূলত বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে এবং ১৫ আগস্টের ঘটনায় শহীদদের শ্রদ্ধা ও তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় ১৯৭৬ সাল থেকে রোজা পালনের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। আবদুল আলিম মোল্লা গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র (৫২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর)।
জানা যায়, প্রতি বছর ৩১ আগস্ট এলাকার দলীয় এবং বঙ্গবন্ধুপ্রেমী নেতাকর্মীদের নিয়ে ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, দোয়া ও ইফতারির মাধ্যমে কর্মসূচি সম্পন্ন করেন তিনি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ইতিহাসের ওই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সময় আবদুল আলিমের বয়স ছিল ২০ বছর। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার খবরে শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েন তিনি। এরপর ওই ঘটনার পরের বছর থেকে বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে দীর্ঘদিন ধরে এই রোজার পালন করে চলেছেন আবদুল আলিম। মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে টঙ্গীর মুদাফা ও ভাদাম এলাকায় বন্যাকবলিত মানুষকে সাহায্য করতে আসেন বঙ্গবন্ধু। জাতির পিতাকে একনজর দেখতে ওই এলাকার কৃষক, শ্রমিক, সাধারণ মানুষ সবাই জড়ো হন। শরীরে ময়লা, হাতে কাদা নিয়ে সবাই কাছে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে জড়িয়ে ধরেন। বঙ্গবন্ধুও তাদের বুকে জড়িয়ে নেন। কিশোর আবদুল আলিম মোল্লাকেও গালে হাত দিয়ে আদর করে দেন বঙ্গবন্ধু। এরপর থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার জন্ম হয় আবদুল আলিমের। বর্তমানে তিনি টঙ্গী থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য এবং গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আবদুল আলিমের বাবা হাজি মো. আরব আলী মোল্লা, মা কমলা বেগম। তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জনক।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করবেন বলেও জানান তিনি। আবদুল আলিম মোল্লা বলেন, আমি একজন নগণ্য মানুষ। বঙ্গবন্ধুর জন্য আর কী করতে পারবো! তাই বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারসহ যাদের হত্যা করা হয়েছে তার প্রতিবাদে প্রতি বছর আগস্ট মাসে শোক পালনের পাশাপাশি রোজা রেখে তাদের মাগফিরাত কামনা করি। এটি আমার একটি সাধনা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করে যাব।