নারায়ণগঞ্জ শহরে পুলিশ ও বিএনপির সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত শাওনকে যুবলীগ কর্মী হিসেবে দাবি করছেন ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা৷ শাওন হত্যার বিচার চেয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে মিছিলও করেছেন তারা।
অন্যদিকে জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ শাওনকে সক্রিয় যুবদল কর্মী দাবি করে তাকে কেন্দ্রীয় যুবদলের অন্যতম সদস্য সাদেকুর রহমান সাদেকের লোক হিসেবে অভিহিত করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতেও দেখা যায় যুবদল নেতা সাদেকুর রহমান সাদেকের নেতৃত্ব দেয়া একটি মিছিলের সামনের সারিতে রয়েছেন শাওন। এছাড়া সংঘর্ষ চলাকালে বিভিন্ন গণমাধ্যমের ফেসবুক লাইভেও শাওনকে সরাসরি পুলিশের সাথে সংঘর্ষে অংশ নিতে দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত র্যালিতে অংশ নেন শাওন। এরপর পুলিশি বাধা ও পরবর্তীতে সংঘর্ষ শুরু হলে সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে শাওন আহত হয়। নেতাকর্মীরা দ্রুত তাকে নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শাওন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়নের গোপালনগর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাহেব আলীর ছেলে। সে একই সাথে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলীর ভাতিজা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চেয়ারম্যান শওকত আলী। তিনি বলেন, শাওন আমার চাচাতো ভাই সাহেবের ছেলে। সে কোনো দল করতো কি না জানি না। এখন যদি ভেতরে ভেতরে কোন দলকে সমর্থন করে সেটা তো আমি বলতে পারবো না। কিভাবে বা কার সাথে নারায়ণগঞ্জ শহরে গেলো আমি সেই খোঁজ নিচ্ছি।
শাওনের বড় ভাই ফরহাদ প্রধান বলেন, শুনতেছি সে নাকি যুবদলের মিছিলে গেছিলো। রাতে শাওন হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মিছিলও করেছেন শাওনের চাচা, আওয়ামী লীগ নেতা শওকত আলীর অনুগত নেতাকর্মীরা।
তবে সংঘর্ষের প্রকাশিত ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায় যুবদল নেতা সাদেকুর রহমান সাদেকের মিছিলে সামনের সারিতে মিছিল করছেন শাওন। একই সাথে যখন সংঘর্ষ শুরু হয় সেখানেও ইটপাটকেল সংগ্রহ করে সেটা পুলিশের দিকে ছুড়তে দেখা যায় শাওনকে। ফেইসবুকে সম্প্রচারিত হওয়া লাইভে শাওনের উপস্থিতি ও পুলিশের দিকে ঢিল ছুড়তে দেখা গেছে।
গতকালের সংঘর্ষে নিহত শাওনের বিভিন্ন সময়ের যুবদলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ছবি, যেখানে তাকে বেশিরভাগ সময়ে কেন্দ্রীয় যুবদল সদস্য সাদেকুর রহমানের সাথে দেখা যাচ্ছে। জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি ইঞ্জি: সাঈদ রেজা খান মুঠোফোনে বিডি২৪লাইভকে বলেন, শাওন বিগত প্রায় তিন বছর ধরেই যুবদলের রাজনীতিতে সরাসরি সম্পৃক্ত৷ শুধু তিনিই নন, আওয়ামী লীগের শওকত চেয়ারম্যানের অধিকাংশ আত্মীয়ই বিএনপি করেন৷
নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি বলেন, শাওনের যেই ছবিটি প্রকাশিত হয়েছে সেটা কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য সাদেকুর রহমান সাদেকের মিছিল। ফলে বলাই যায় সে সাদেক ভাইয়ের কর্মী ছিল।
একই বিষয়ে মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শাহেদ আহমেদ বলেন, শাওন যেই মিছিলে ছিল সেটা কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সদস্য সাদেক ভাইয়ের নেতৃত্বে এসেছিল। শাওন সেখানে সামনের সারিতে ছিল৷