সেই শিক্ষিকার মৃত্যু: চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন কেয়ারটেকার

নাটোরে কলেজছাত্রকে বিয়ে করা আলোচিত সেই শিক্ষিকা খাইরুন নাহারের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিয়ের ৮ মাসের মাথায় রোববার সকাল ৭টার দিকে শহরের বলারিপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপরই সেই শিক্ষিকার মৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন সেই বাড়ির কেয়ারটেকার মো. নাজিমুদ্দিন।

কেয়ারটেকার মো. নাজিমুদ্দিন বলেন, ‘রাত ১১টায় বাসায় ঢোকেন মামুন। আবার আড়াইটার দিকে বের হন। এ সময় কেনো বের হচ্ছে জানতে চাইলে মামুন বলেন, ওষুধ কিনতে যাচ্ছেন। পরে সকাল ৬টার দিকে মামুন আবার ফিরে আসেন। এরপর তিনি আমাকে ডাকেন। আমি চার তলায় গিয়ে দেখি লাশ সিলিং ফ্যান থেকে নামানো।’

তবে স্বামী মামুনের দাবি, শনিবার সকালে ফজরের নামাজ পড়ে মামুন বাড়িতে ঢুকে দরজায় নক করেন। কিন্তু তাতে কোনো সাড়া না পাওয়ায় দরজা ভেঙে ভেতরে এসে দেখেন গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছেন খাইরুন নাহার।

ভবনের বাসিন্দা ও এলাকাবাসী জানান, রোববার ভোরে স্বামী মামুন ভবনের অন্য বাসিন্দাদের জানায় তার স্ত্রী খাইরুন নাহার শেষ রাতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। তবে তার বাসায় গিয়ে খাইরুন নাহারের মরদেহ মেঝেতে শোয়া অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাদের সন্দেহ হয়। এরপর তারা মামুনকে বাসার মধ্যে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন।

ঘটনার পর থেকে এলাকাবাসী ও প্রতিবেশীরা ভিড় জমিয়েছেন শহরের বলারীপাড়ার ওই দম্পতির ভাড়া বাসার সামনে। তাই বাড়ির ভেতরেই মামুনকে পুলিশ পাহারায় রাখা হয়। এরপর তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাটোর সদর ওসি নাছিম আহমেদ।

নাছিম আহমেদ বলেন, আসলে কী ঘটেছে তা জানার জন্য মামুনকে হেফাজতে নেয়া দরকার। তবে বলারীপাড়ার ভাড়া বাড়ির সামনে মানুষজনের উপস্থিতিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই বাড়িতেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এরপর তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ওই শিক্ষিকা মোছা. খাইরুন নাহার গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় পৌর এলাকার মো. খয়ের উদ্দিনের মেয়ে এবং উপজেলার খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। গত ৩১ জুলাই তাদের বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় বিয়ের খবরটি ভাইরাল হয়। এতে সারা বাংলাদেশে আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়।

এর আগে, গত ১২ ডিসেম্বর কাজী অফিসে গিয়ে দুইজন গোপনে বিয়ে করেন। বিয়ের ছয় মাসের বেশি সময় পার হওয়ার পর সম্প্রতি বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। খাইরুন নাহার গুরুদাসপুর খুবজিপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক এবং মামুন নাটোর এন এস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।