ভগ্ন হৃদয়ে বাংলাদেশ ছাড়ছেন প্রেমের টানে আসা ভারতীয় যুবক

এবার ভগ্ন হৃদয়ে ‘প্রেমিকার জেলা’ বরগুনা ছেড়েছেন ‘প্রেমের টানে’ বাংলাদেশে আসা ভারতের তামিলনাড়ুর যুবক প্রেমকান্ত। বরগুনা থেকে তিনি যাবেন বরিশালে। সেখান থেকে ঢাকা হয়ে ভারতে চলে যাবেন এই যুবক। আজ শনিবার ৬ আগস্ট দুপুর ২টায় বরগুনার খাজুরতলা বাস টার্মিনাল থেকে একটি বাসে বরিশালের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনা সদর থানার ওসি আলী আহমদ।

তিনি বরগুনা ছেড়ে যাচ্ছেন শুনে উৎসুক জনতা তাকে দেখতে বরগুনার খাজুরতলা বাস টার্মিনালে ভিড় করেন। এ সময় তিনি সবাইকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বাস টার্মিনালে আসা উৎসুক মানুষের উদ্দেশে বাংলায় বলেন, ‘ভালো থেকো বরগুনা, ভালো থেকো বাংলাদেশ’।

এ সময় তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম বাংলাদেশে। দেখাও হয়েছিল। তবে কী কারণে তার পরিবার ও সে আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইছে না- বিষয়টি আমার অজানাই থেকে গেলো। দীর্ঘদিনের সম্পর্ক হয় তো ভুলতে কষ্ট হবে তবু ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করবো।’ বাস টার্মিনালে উপস্থিত মো. মামুন বলেন, ‘তিনি চলে যাচ্ছেন শুনে আমরা দেখা করতে এসেছিলাম। কথাও বলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তিনি কারও সঙ্গেই কথা বলতে আগ্রহী না। ঘটনার সত্য-মিথ্যা আমরা জানি না। তবে প্রেমের টানে তিনি বরগুনায় এসেছিলেন তার জন্য শুভ কামনা রইলো।’

এ বিষয়ে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মেহেদী হাসান বলেন, ‘প্রেমকান্ত যেহেতু অন্য দেশের নাগরিক- আমরা তাকে নিরাপত্তা দেয়ার চেষ্টা করেছি। তাকে বুঝিয়ে ভারতে ফিরে যেতে অনুরোধ করেছি। তিনি আমাদের কথা শুনেছেন এবং ভারতে ফিরে যাওয়ার জন্য শনিবার দুপুরে বরগুনা থেকে চলে গেছেন। আমরা আশা করি, তিনি নিরাপদে তার দেশে পৌঁছাবেন।’

গত কয়েকদিন ধরে প্রেমকান্ত দাবি করে আসছেন, ২০১৯ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বরগুনার কলেজপড়ুয়া তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয়। প্রথমে প্রেমকান্তের ভিডিওতে নিয়মিত লাইক ও কমেন্ট করতেন। এরপর দুজনের মধ্যে অনলাইনে যোগাযোগ হয়। সেখান থেকে প্রেম হয়। তরুণীর পরিবারের সঙ্গেও সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছে। প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে অনেক আগেই তিনি বাংলাদেশে আসতে চেয়েছিলেন।

তিনি বলেন, কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে আর আসা হয়নি। গত ২৪ জুলাই তিনি বরিশালে আসেন। এরপর তিনি শহরের একটি হোটেলে ওঠেন। পরদিন দুপুর ১২টায় বরিশালের একটি কলেজের সামনে দুজন দেখা করেন। দুপুরে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় একসঙ্গে খাবার খান। ওই দিন বিকালে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে পুনরায় তারা দেখা করেন, কথা বলেন। এ সময় তরুণীর সঙ্গে তার কয়েকজন বান্ধবীও ছিল।

আরও দাবি করেন, ২৭ জুলাই তারা দুজন পুনরায় শহরে ঘুরতে বের হন। কাশিপুর এলাকায় গেলে এক যুবক দাবি করেন, তার সঙ্গে ওই মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক আছে। এরপর ওই যুবক প্রেমকান্তকে মারধর করেন। এ সময় তার কাছ থেকে টাকাও ছিনিয়ে নেন। মারধরের শিকার হয়ে তাকে তিন রাত থানায় থাকতে হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।