প্রেমের টানে কিছুদিন আগে বরগুনায় আসেন ভারতের তামিলনাড়ুর যুবক প্রেমকান্ত। দেখা করেন মনের মানুষটির সঙ্গেও। একসঙ্গে খাবারও খেয়েছেন। প্রেমিকার সঙ্গে ঘর বাঁধার ইচ্ছা থাকলেও চলে যেতে হচ্ছে নিজ দেশে। এক ধরনের ভগ্ন হৃদয় নিয়েই বরগুনা ছেড়েছেন এ প্রেমিক।
শনিবার দুপুর ২টার দিকে প্রেমিকার জেলা বরগুনার খাজুরতলা বাস টার্মিনাল থেকে একটি বাসে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা হন প্রেমকান্ত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনা সদর থানার ওসি আলী আহমদ।
তামিলনাড়ুর এ যুবক বরগুনা ছেড়ে যাচ্ছেন শুনে খাজুরতলা বাস টার্মিনালে ভিড় করেন অনেকে। এ সময় তিনি সবাইকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাকে দেখতে আসা লোকজনদের উদ্দেশ্যে বাংলায় বলেন, ‘ভালো থেকো বরগুনা, ভালো থেকো বাংলাদেশ’।
এ সময় তিনি বলেন, প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে বাংলাদেশে এসেছিলাম। দেখাও হয়েছিল। তবে কী কারণে তার পরিবার ও সে আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইছে না- বিষয়টি আমার অজানাই থেকে গেল। দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ভুলতে কষ্ট হবে। তবু ভোলার চেষ্টা করবো।
বাস টার্মিনালে উপস্থিত মো. মামুন বলেন, তামিলনাড়ুর এ যুবক চলে যাচ্ছেন শুনে দেখা করতে এসেছিলাম। কথাও বলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তিনি কারো সঙ্গেই কথা বলতে আগ্রহী ছিলেন না। ঘটনার সত্য-মিথ্যা আমরা জানি না।
বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মেহেদী হাসান বলেন, প্রেমকান্ত অন্য দেশের নাগরিক হওয়ায় আমরা নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তাকে বুঝিয়ে ভারতে ফিরে যেতে অনুরোধ করেছি। তিনি আমাদের কথা শুনেছেন। ভারতে ফেরার উদ্দেশ্যে শনিবার দুপুরে বরগুনা থেকে চলে গেছেন।
প্রেমকান্তের দাবি, ২০১৯ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বরগুনার কলেজপড়ুয়া তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয়। প্রথমে প্রেমকান্তের ভিডিওতে নিয়মিত লাইক ও কমেন্ট করতেন। এরপর দুজনের মধ্যে অনলাইনে যোগাযোগ হয়। সেখান থেকে প্রেম হয়। তরুণীর পরিবারের সঙ্গেও সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছে। প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে অনেক আগেই তিনি বাংলাদেশে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে আসা হয়নি। ২৪ জুলাই তিনি বরিশালে আসেন। এরপর তিনি শহরের একটি হোটেলে ওঠেন। পরদিন দুপুর ১২টায় বরিশালের একটি কলেজের সামনে দুজন দেখা করেন। দুপুরে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় একসঙ্গে খাবার খান। ওই দিন বিকেলে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে ফের দেখা করেন। এ সময় তরুণীর সঙ্গে তার কয়েকজন বান্ধবীও ছিলেন।
২৭ জুলাই তারা দুজন ফের শহরে ঘুরতে বের হন। তবে কাশিপুর এলাকায় গেলে তরুণীর সঙ্গে প্রেম রয়েছে বলে দাবি করেন এক যুবক। এরপর প্রেমকান্তকে মারধর করেন তিনি। এ সময় তার কাছ থেকে টাকাও ছিনিয়ে নেন। মারধরের শিকার হয়ে তিন রাত থানায় থাকতে হয়েছে বলেও অভিযোগ প্রেমকান্তের।