আমরা সবাই সম দেখার জন্য হাতে ঘড়ি পরি। আস্তে আস্তে ঘড়ি পরা ফ্যাশন হয়ে দাড়িয়েছে। ব্র্যান্ডের ঘড়ি হাতে পরলে চাল-চলনই পাল্টে যায়। এমনকি ব্যক্তিত্ব প্রকাশও ঘটে এই ঘড়ি পরার স্টাইলে।
ঘড়ি সাধারণত বাম হাতে পরা হয়। অধিকাংশ নারী-পুরুষই বা হাতে ঘড়ি পরে অভ্যস্ত। কিন্তু কেন? বাম হাতে ঘড়ি পরার কারণ না জেনেই অনেকে পরছেন। অনেকে উত্তর দেন, অন্যরা বাম হাতে পরেন তাই আমিও পরছি। ঘড়ি বাম হাতে পরার পেছনে কারণ রয়েছে।
ইতিহাস বলছে, সর্বপ্রথম ছোট ঘড়ি আবিস্কার হয়। তখন বেশিরভাগ মানুষই ঘড়ি পকেটে রাখতেন। পকেট ঘড়ি সেই সময় বেশ জনপ্রিয় ছিল। হাতে পরা যেতে পারে সেই ধারণা তখনো ছিল না। পরে বোর যুদ্ধের সময় একদল সৈনিক চামড়ার স্ট্র্যাপে ঘড়ি আটকে প্রথম কবজিতে পরা শুরু করেন।
মিলিটারি অপারেশনের প্রতি মিনিটকে নথিবদ্ধ করতেই তারা এটি করেছিলেন। পকেট থেকে ঘড়ি বের করে সময় নথিবদ্ধ করা ছিল কষ্টকর। তাই হাতে ঘড়ি বেধে নেয়ার উপায় বের করেন। সেই থেকেই শুরু হয় হাতে ঘড়ি পরার চল।
তখনো বাম কিংবা ডান হাতের চল শুরু হয়নি। তবে ঘড়ি পরার চল জনপ্রিয়তা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে আসে নানা ডিজাইন। সেই ঘড়ি ছিল বিশাকৃতির এবং ততটা টেকসইও ছিল না। কোনো কাজ করতে গেলেই সেই ঘড়ি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। ডান হাতেই বেশি কাজ করা হতো।
তাই ঘড়ি যেন ভেঙে না যায় তা নিশ্চিত করতে বাম হাতে পরা শুরু হয়। আর তখন বাম হাতের ঘড়ি পরার অভ্যাসেই বেশ স্বাচ্ছন্দ্য পেতে থাকে মানুষ। আস্তে আস্তে এই রীতিও জনপ্রিয়তা পায়। শুরু হয় বাম হাতে ঘড়ি পরার চল।
বিজ্ঞান বলছে, শরীরের গঠনকে গুরুত্ব দিলে ছেলেদের ডান হাতে এবং মেয়েদের বামহাতে ঘড়ি পরা উচিত। তবে বিভিন্ন গবেষণার তথ্যে উঠে এসেছে, অধিকাংশ মানুষই ডান হাতি হয়। তাদের চোখের গতিবিধি বিচার করে দেখা গেছে তারা বামহাতে ঘড়ি পরলে সহজে সময় দেখতে পারে।
তাছাড়া ডান হাতে কাজ করা বা খাওয়া হয়। তাই ঘড়িতে সময় দেখতে সেই ব্যস্ত হাত ব্যবহার করা কষ্টকর। খাওয়া বা কাজ থামিয়ে সময় দেখতে হবে। বামহাতে ঘড়ি পরলে এমন সমস্যায় পড়তেও হয় না। সেই থেকেই বেশিরভাগ নারী-পুরুষ বামহাতে ঘড়ি পরা শুরু করেছে।
আজকের দুনিয়ায় সব কিছুই স্মার্ট। ফোন স্মার্ট, এমনকী ঘড়িও। তাই তো আরও বামহাতে ঘড়ি পরার প্রয়োজন বেড়েছে। কারণ যেমনটা আগেই আলোচনা করা হয়েছে যে এ বিশ্বের বেশিরভাগই ডান হাতি। আর বামহাতে ঘড়ি পরলে তবেই না ডান হাত দিয়ে সহজে তা অপারেট করা সম্ভব হবে। তাই তো আজকের দিনে বামহাতে ঘড়ি পরার প্রয়োজন বেড়েছে আরো বেশি মাত্রায়!
সূত্র: বোল্ডস্কাই