অস্ট্রেলিয়ার একটি শহরের আকাশে এক সন্ধ্যায় হঠাৎ করে দেখা দেয় গোলাপী আভা। গত বুধবার স্থানীয় বাসিন্দা ট্যামি সজোমোভস্কি সেই আভা দেখে অবাক হয়ে ভেবেছিলেন হয়তো কোনও অলৌকিক দৃশ্য দেখছেন তিনি।
ট্যামি সজোমোভস্কি বলেন, ‘আমি ঠান্ডাই ছিলাম, শান্ত মা হয়ে বাচ্চাদের বললাম: ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কিন্তু আমার মাথায় ঘুরছিলো এটা কোন নরক?’
পরে জানা যায় এই আলোর আভা ছড়াচ্ছে এক গাঁ’জার খামার থেকে। উত্তরাঞ্চলীয় ভিক্টোরিয়া প্রদেশের মিলডুরা শহরে বাইরে অবস্থিত এই খামার।
তবে স্থানীয় অন্য অনেক বাসিন্দার মতোই ট্যামি সজোমোভস্কির মন তখন পড়ে ছিল অন্য কোথাও-এটা কি কোনও এলিয়েনের আগমন? নাকি উল্কাপিণ্ড। তিনি বলেন, ‘মায়েরা ফোন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, বাবারা পেছনের উঠানে ছুটে যায়: আমি ভাবলাম দ্রুত গিয়ে চা নিয়ে নেই, কারণ পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে’।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা নিকিয়া চ্যাম্পিয়ন প্রথমে ভেবেছিলেন এটা উজ্জ্বল লাল চাঁদ। তবে পরে বুঝতে পারেন আলো ছড়াচ্ছে মাটি থেকে। তিনি বলেন, ‘আমার মাথায়ও পৃথিবী ধ্বংসের দৃশ্য ঘুরছিল’।
পরে এই দুই নারীরই ভুল ভাঙে।
অস্ট্রেলিয়ায় ২০১৬ সাল থেকে মেডিক্যাল গাঁ’জা বৈধ, কিন্তু বিনোদনে মা’দ’কটির ব্যবহার নিষিদ্ধ। দেশটিতে কিছু উৎপাদন খামার রয়েছে। তবে নিরাপত্তার কারণে সেগুলোর অবস্থান অতি গোপনীয় রাখা হয়। কিন্তু এই খামারের ক্ষেত্রে সেটি আর গোপন রাখা যায়নি।
ফসলটির উৎপাদন বাড়ানোয় সাহায্য করার জন্য লাল রঙের আলো ব্যবহার করা হয়। সাধারণত, সন্ধ্যার সময় এই আলোগুলো বন্ধ করে রাখা হয়। তবে বুধবার সেগুলো আর কাজ করেনি বলে জানান উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ক্যান গ্রুপের এক মুখপাত্র।
আর সেদিনের আকাশে মেঘ থাকায় এই আলো ‘উল্কাপিণ্ডে সূর্যাস্ত’ তৈরি করে। প্রায় এক ঘণ্টার দূরত্ব থেকেও তা শনাক্ত করতে পারা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা নিকিয়া চ্যাম্পিয়ন বলেন, ‘আমি হাসিতে ফেটে পড়লাম… এটা অনেক ঠান্ডা কিছু হতে পারতো, কিন্তু দেখা গেলো এটা কেবলই মেডিক্যাল গাঁ’জা উৎপাদনের আলো’। ট্যামি সজোমোভস্কিও জানান তিনিও যথেষ্ট হেসেছেন। প্রাথমিক ভীতি কে’টে যাওয়ার পর তিনি আলোর সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়ে পড়েন। সূত্র: বিবিসি