মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতার ফেরিওয়ালা হিমেল

জিয়াউল হুদা হিমেল, পেশায় একজন উন্নয়ন কর্মী হলেও নেশায় মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতার ফেরিওয়ালা। যেখানে দেখতে পান মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাব সেখানেই বিলিয়ে দেন নিজেকে। সমাজের অসেচতন মানুষের মাঝে সচেতনতা গড়ে তুলাই কেন তার নেশা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতার কাজ করছি। সত্যিকার অর্থে একটি সমাজের মানুষের মানসিক পরিবর্তন না হলে সেই সমাজ কখনো উন্নত হবে না। আর সমাজ উন্নত না হলে দেশও এগিয়ে যেতে পারবে না।

সামাজিক সচেতনতার এই কাজে পেয়েছি হাজারো মানুষের ইতিবাচক সাড়া। নিজের সন্তানকেও মানবিক মানুষ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এখন এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছি। এছাড়াও দেশ ব্যাপী মানবিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে যাবো এবং সচেনতন করার চেষ্ঠা করবো দেশের অসচেতন মানুষদের।

ছাত্র জীবন থেকে মানবিক ও সচেনতনতার কাজ শুরু করেন মোঃ জিয়াউল হুদা হিমেল। ২০১৭ সালে তিনি মেন্টাল হেলথ ফার্স্ট এইড ইংল্যান্ড কর্তৃক প্রশিক্ষিত হয়ে একজন ফার্স্ট এইড ট্রেনার হিসেবে উত্তীর্ণ হন। অস্ট্রেলিয়ায়ান এইড এর অর্থায়নে একটি প্রকল্পে দেশের বিভিন্ন জেলায় যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা ও প্রাথমিক প্রতিবিধানকারী তৈরির লক্ষ্যে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। দুইবছর প্রশিক্ষক হিসেব কাজ করতে গিয়ে অনুধাবন করেন তরুণদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে কোন ধারণাই নেই, উল্টা তরুণ, বৃদ্ধ, শিশু কিশোর সহ সকলের মাঝে কুসংস্কার বিদ্যমান।

সামাজিক কুসংস্কার ও ভুল ধারনা পাল্টে দেওয়ার লক্ষ্যে তিনি নিজ উদ্যোগে স্কাউট, রোটারি রোটারেক্ট সংগঠন এর মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে সেমিনার, ওয়ার্কশপ, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে মত বিনিময় এর মাধ্যমে তাদের উদ্বুদ্ধ করতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন যাতে করে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়টি সর্ব স্তরে গুরুত্ব পায়। একই সাথে সকল নাগরিক প্রযোজ্য ক্ষেত্রে চিকিৎসা সেবা নিতে পারে। অন্য সকল রোগের মতই এটি একটি রোগ হিসেবে সকলে এর প্রতিরোধ এবং প্রতিকার করতে সচেষ্ট হয়। সামাজিক ভাবে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়টির গুরুত্ব সকলের কাছে পৌঁছে দিতে নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছেন হিমেল।

স্নাতকোত্তর শেষ করে কর্ম জীবনের লক্ষ্যে ঢাকায় অবস্থান করলেও পৈত্রিক আদি নিবাস লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলায়। কর্ম জীবন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থায় শুরু করলেও মাঝে দীর্ঘ সময় কর্পোরেট চাকুরী করেছেন সুনামের সাথে। তিনি বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, ভারত ও পাকিস্তান সফর করেছেন নেতৃত্ব দিয়েছেন সফরকারী দলকে।

জিয়াউল হুদা বাল্যকাল থেকেই সমাজিক কার্যক্রম এর সাথে জড়িত ছিল। স্কুল জীবনে স্কাউটিং কার্যক্রম এর মাধ্যমে নিজেকে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে গড়ে তুলেন। তারপর থেকে পুরো শিক্ষা জীবনেই স্কাউটিং কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। সম্প্রতি সময়ে স্কাউট জাতীয় সদর দপ্তরে জাতীয় উপ কমিশনার এর দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি রোটারী ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ৩২৮১ এর ঢাকা লিবার্টি ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০২২-২৩ বর্ষের জন্য ট্রেনিং টিমের সদস্য হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের একটি সামাজিক উন্নয়নমূলক সংস্থা নর্থ বেঙ্গল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (এনবিডিএস)-এর নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের সুপ্রাচীন ঐতিহ্যবাহি দল ওয়ারি ক্লাবের সদস্য হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন।