স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে নিজের ঘরেই কবর খুঁড়লেন স্বামী

বরগুনায় পারিবারিক কলহের কারণে স্ত্রীর সঙ্গে অভিমানে নিজের ঘরে কবর খুঁড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছেন জাফর গাজী নামে এক যুবক।

তার শেষ ইচ্ছা, স্ত্রী তার বসতঘরে ফিরে না এলে আত্মহত্যা করে নিজের খোঁড়া কবরে শায়িত হবেন। গ্রামপুলিশ ও স্থানীয় জনতা কবর খোঁড়া বন্ধ করলেও গ্রামের অসংখ্য নারী-পুরুষ প্রতিদিন ভিড় করছেন জাফর গাজীর বাড়িতে।

জাফর গাজী বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের ইসমাইল গাজীর ছেলে।

জানা যায়, এক যুগের সংসার জাফর ও হাজেরা বেগমের। তাদের সংসার জীবনে প্রায় নানা বিষয় নিয়ে ঝগড়া চলে আসছে।
চলতি সপ্তাহে এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদে দুপক্ষের মধ্যে সালিশবৈঠকের কথা রয়েছে। তারা দুজনেই এক মাস ধরে আলাদা থাকেন। হাজেরা বেগম জাফরের সংসার করতে চান না। অন্যদিকে জাফর হাজেরাকে কিছুতেই বাঁচতে রাজি নয়।

জাফর বলেন, ১৩ বছর আগে হাজেরা বেগমকে ভালোবেসে বিয়ে করি। বিয়ের পর থেকেই হাজেরা আমার কথার অবাধ্য ছিল। তার পরও আমরা গ্রামের বাড়িতে বসবাস শুরু করি। কিছু দিন পরে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হলে দুজনে আলাদা থাকতে শুরু করি।

এ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিতে একাধিকবার সালিশ করলেও হাজেরা তা মানছে না। সর্বশেষ চলতি বছরের ২২ জুন রাগ করে হাজেরা কদমতলা বাজারে তার চায়ের দোকানে বসবাস শুরু করেন। তাকে দোকান থেকে ঘরে ফেরাতে একাধিকবার চেষ্টা করে আমি ব্যর্থ হয়ে নিজের কবর খুঁড়তে শুরু করি। হাজেরা ঘরে ফিরে না এলে আমি আত্মহত্যা আমার ঘরের মধ্যে আমার খোঁড়া কবরে ঘুমিয়ে যাব। এ কারণে নিজেই কবর খুঁড়ে রাখলাম।

এ বিষয় হাজেরার রয়েছে ভিন্ন অভিযোগ। তিনি বলেন, ১৩ বছর আগে ঢাকায় আমাদের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে জাফর। জাফরের আগের স্ত্রীকে তালাক না দিয়ে মিথ্যা তালাকনামা তৈরি করে তা দেখিয়ে আমাকে বিয়ে করে। এসব নিয়ে ঝগড়া-ঝামেলা শুরু হলে গ্রামে চলে আসি আমরা। বর্তমানে সংসারে অমনোযোগী হওয়ায় প্রায় সময় ঝগড়া চলে আসছে আমাদের মধ্যে। জাফর কোনো কাজ করে না। মাঝে মধ্যে মাছ ধরে বিক্রির টাকায় কোনো রকম সংসার চলে আমাদের। আমি জাফরের সঙ্গে সংসার করতে রাজি না।

স্থানীয় ইউপি সদস্য কাজি মোখলেচুর রহমান জানান, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে জাফর যাতে কোনো অঘটন না ঘটাতে পারে, সে জন্য ঘর থেকে গ্রামপুলিশের মাধ্যমে কদমতলা বাজারে নিয়ে আসা হয়েছে জাফরকে। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে। পুলিশ পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।

বরগুনা সদর থানার ওসি আলী আহম্মেদ বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি আইনগতভাবে দেখা হবে।