এক ভয়ঙ্কর সৌরঝলক (‘সোলার ফ্লেয়ার’)-এর জন্ম হয়েছে সূর্যে। যা আছড়ে পড়তে পারে পৃথিবীতে। এর প্রভাব কৃত্রিম উপগ্রহের (স্যাটেলাইট) ওপরও পড়তে পারে। ফলে ফোন-টিভি-ইন্টারনেট পরিষেবার সমস্যা হতে পারে।
এর আগে সৌরঝলকের কারণে একেবারে তছনছ হয়ে যায় আটলান্টিক মহাসাগরের উপরের আকাশে যাবতীয় রেডিও যোগাযোগ ব্যবস্থা। যার জেরে আটলান্টিক মহাসাগর উপকূলবর্তী আমেরিকা ও ইউরোপের বিশাল এলাকাজুড়ে রেডিও যোগাযোগ ব্যবস্থায় কার্যত এখন ‘ব্ল্যাক আউট’।
সূর্যের বুকে তড়িচ্চুম্বকিয় বিকিরণের বিস্ফোরণকে বলা হয় সৌরঝলক। আমাদের পুরো সৌরমণ্ডলে এর থেকে বড় বিস্ফোরণ কিছু হয় না। এটি কয়েক মিনিট থেকে শুরু করে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রতি ১১ বছরে সূর্যের এই ম্যাগনেটিক ফিল্ডে বদল আসে। আর তার ফলেই ব্যাপক মাত্রা সোলার ফ্লেয়ারের সৃষ্টি হয়। এর পরে সূর্য কিছুটা থিতু হয়। তখন বদলে যায় সূর্যের ম্যাগনেটিক ফিল্ড এবং আবার নতুন চক্র শুরু হয় সূর্যের বুকে।
কখনও কখনও এই সোরঝড় এবং তা থেকে নির্গত হওয়া সৌরঝলক মারাত্মক আকার ধারণ করে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল এই সৌরঝলকের বেশির ভাগটাই আটকে দিতে পারে। কিন্তু তার পরেও কিছু সোলার ফ্লেয়ার পৃথিবীতে এসে পৌঁছোয়। এর প্রভাব পড়ে রেডিও তরঙ্গে, বিদ্যুৎ ব্যবস্থায়, ইন্টারনেট পরিষেবা বা মোবাইল নেটওয়ার্কে। অন্য প্রাণীরাও এর প্রভাব টের পায়।
কিন্তু এই সৌরঝলকের প্রভাব বেশি মাত্রায় পড়ে কৃত্রিম উপগ্রহের উপর। ইতিমধ্যেই ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি আশঙ্কা করছে, বেশ কিছু স্যাটেলাইটের ওপর এই সৌরঝড়ের মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। গত পাঁচ-ছয় বছর ধরে সৌরঝলকের প্রভাবে কৃত্রিম উপগ্রহগুলোর অবস্থানের বদল হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। সামনে যে সৌরঝড় আসছে, তার প্রভাবে এই অবস্থান আরও দ্রুত বদলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।
চলতি বছরের শেষ দিকে এই সৌরঝলক সবচেয়ে বড় আকার নেবে। এর প্রভাবে ফোন-টিভি-ইন্টারনেট পরিষেবার সমস্যা হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।