মানসম্মত সেবা (কোয়ালিটি অব সার্ভিস) দিতে না পারায় দেশের শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের সিম বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অপারেটরটি নতুন সিম বিক্রি করতে পারবে না বলে জানা গেছে।
তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা চেষ্টা করেও গ্রামীণফোনের সেবার মান ভালো করার কোনও উদ্যোগ নিতে দেখিনি। তারা গ্রাহক বাড়াবে, কিন্তু সেবার মান বাড়াবে না, এটা হতে দেওয়া যাবে না। যতদিন না তারা সেবার মান ভালো করবে এবং তা সন্তোষজনক পর্যায়ে উন্নীত না হবে ততদিন গ্রামীণফোনের সিম বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
বুধবার (২৯ জুন) দুপুরে বিষয়টির অনুমোদনের পরে বিটিআরসি এ বিষয়ক একটি নির্দেশনা গ্রামীণফোনে পাঠিয়েছে। অপারেটরটি গ্রাহকদের কোয়ালিটি অব সার্ভিস নিশ্চিত করতে পারলেই নতুন সিম বিক্রি করতে পারবে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র বুধবার বিকালে বাংলা ট্রিবিউনকে গ্রামীণফোনের সিম বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, খবর সঠিক। তারা মানসম্মত সেবা (ভয়েস কল ও ইন্টারনেট) দিতে পারছে না। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অপারেটরটির (গ্রামীণফোন) সিম বিক্রি করতে পারবে না।
বিটিআরসি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে গত মে পর্যন্ত গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা ৮ কোটি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলা ট্রিবিউনকে এক বিবৃতিতে গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশন খায়রুল বাসার বলেন, বিটিআরসি ও আন্তর্জাতিক সংস্থা আইটিইউ’র সেবার মানদণ্ড অনুসরণ করার পাশাপাশি সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মানদণ্ড থেকেও এগিয়ে আছে গ্রামীণফোন। ধারাবাহিকভাবে নেটওয়ার্ক ও সেবার মানোন্নয়নে আমরা বিটিআরসি’র সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি।
নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া নিলামেও গ্রামীণফোন সর্বোচ্চ অনুমোদিত তরঙ্গ অধিগ্রহণ করেছে। অপ্রত্যাশিত এ চিঠি ও নিষেধাজ্ঞা নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণে আমরা পরিস্থিতি মূল্যায়ন করছি। আমরা মনে করি, আমাদের সম্ভাব্য গ্রাহকদের স্বার্থে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনাই হবে এ সমস্যা সমাধানের সর্বোত্তম উপায়।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত সর্বশেষ নিলামে সবচেয়ে বেশি তরঙ্গ (৬০ মেগাহার্টজ) কেনে গ্রামীণফোন। এর আগে গ্রামীণফোনের হাতে ছিল ৪৭ দশমিক ৪০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ। সব মিলিয়ে অপারেটরটির তরঙ্গের পরিমাণ ১০৭ দশমিক ৪০ মেগাহার্টজ। যদিও বাকি অপারেটরদের মতো গ্রামীণফোনও নতুন বরাদ্দ পাওয়া তরঙ্গ ব্যবহার করতে পারছে না। আগামী ডিসেম্বর থেকে অপারেটরগুলো তরঙ্গ ব্যবহার করতে পারবে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, বর্তমানে এক মেগাহার্টজ তরঙ্গে গ্রামীণফোন ১৪ লাখ লাখ গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে, অন্যান্য অপারেটরের চেয়েও যা বেশি। নতুন তরঙ্গ যুক্ত হলে তা হবে (এক মেগাহার্টজে) ৭ লাখ ৭০ হাজার গ্রাহক।
সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন