ঢাকার ধামরাইয়ে পদ্মা সেতুর আদলে সেতু বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে দশম শ্রেণীর স্কুল ছাত্র সোহাগ। তার তৈরি মাটি, বাঁশ, ও সিমেন্টের ‘পদ্মা সেতু’ দেখতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছে সোহাগের বাড়িতে। সেতুটি দেখে তারা আসল পদ্মা সেতু দেখার স্বাদ মেটাচ্ছে। সোহাগ ধামরাইয়ের সুতিপাড়া এলাকার কৃষক মোহাম্মদ সুলতান আলীর ছেলে। সে ভালুম আতাউর রহমান খান স্কুল ও কলেজে ব্যবসা শাখার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
সরেজমিনে দেখা যায়, সোহাগ তার বাড়ির আঙ্গিনায় এই পদ্মা সেতু তৈরি করেছে। সেতুটি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে মাটি, বাঁশ, সিমেন্ট, মোবাইলে ব্যবহার করা ছোট বাতি ও সাদা-কালো রং। সেতুটিতে চারটি লেন করা হয়েছে। সেতুর নিচ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে রেললাইন।স্থাপন করা হয়েছে সড়ক বাতি। নিচে মাটি খুঁড়ে রূপ দেওয়া হয়েছে পদ্মা নদীর। এক প্রান্তে রয়েছে চেকপোস্ট। দেখতে ঠিক পদ্মা সেতুর মতই।
সোহাগের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ পাঁচ মাস পরিশ্রম করে সে এই সেতুটি বানিয়েছে। সে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ সেতুটির নির্মান কাজ শেষ হয়। এর আগে ২০১৯ সালে একটি সেতু তৈরি করেছিল সে। তবে সেতুটি শুধু মাটি ও বাঁশ দিয়ে তৈরি করায় নির্মাণের কিছু দিন পরই ভেঙে নষ্ট হয়ে যায়। পরে সে হুবহু পদ্মা সেতু বানানোর পরিকল্পনা করে।
সোহাগ আরও জানায়, প্রথমে পদ্মা সেতুর নকশা ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করি। হাত খরচের টাকা বাচিয়ে সেতু তৈরির জিনিসপত্র কিনি। প্রথমে বাবা-মা বকাঝকা করতো। আশেপাশের লোকজনও নানারকম কটু কথা বলেছে। আমি সেদিকে কান না দিয়ে আমার কাজ করে গেছি। এখন সেতুটি দেখতে আমার বাড়িতে মানুষ ভীড় জমাচ্ছে। দেখে খুব আনন্দ লাগছে। বড় হয়ে আমি ইঞ্জিনিয়ার হয়ে আসল পদ্মা সেতু বানাতে চাই। যেনো ভবিষ্যতে সেতু বানাতে বিদেশ থেকে লোক আনতে না হয়।
সোহাগের বাবা সুলতান আলী বলেন, সেতু বানানোর সময় সোহাগের লেখা-পড়ায় মনোযোগ কম ছিলো। তাই ওরে অনেক গাল-মন্দ করেছি। এখন অনেক দূর থেইক্কা মানুষ সেতু দেখতে আইতাছে। তারা সোহাগের অনেক প্রশংসা করতাছে। গর্বে আমার বুক ভইরা যাচ্ছে। আমি দেশবাসীর কাছে সোহাগের জন্য দোয়া চাই।
এএজেড