দুই দিনের মধ্যে আরও ১৭ জেলায় বন্যার শঙ্কা

ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারনে এক মাসের ব্যবধানে সিলেটে আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে এই বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহতে রূপ নিচ্ছে। ভেঙ্গেছে আগের সব রেকর্ড।উজান থেকে আসা ঢলে এই বিভাগের ৮০ শতাংশ এলাকা বর্তমানে পানির নিচে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ এলাকা ডুবে গেছে। বাকি তিন জেলার শহরের কিছু উঁচু স্থান, পাহাড়ি এলাকা এবং ভবন ছাড়া সবখানে এখন পানি। এছাড়া ভারতের মেঘালয় ও আসামে ক্রমাগত বৃষ্টি হওয়ায় তা বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

ভয়াবহ এই বন্যা পরিস্থিতিতে সবমিলিয়ে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র বলছে, আগামী দুই দিনের মধ্যে উত্তরাঞ্চল ও দেশের মধ্যাঞ্চলের আরও ১৭টি জেলা বন্যায় আক্রান্ত হতে পারে। কারণ সেসব এলাকায় বন্যার তীব্রতা বাড়ছে, নদীগুলোর পানি আরও বাড়তে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান ভুঁইয়া বলছেন, ”সিলেট, সুনাগমঞ্জ এলাকায় আজ (শনিবার) এবং আগামীকালও বৃষ্টি হবে। ফলে সেসব এলাকার বন্যার পানি আরও বাড়তে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। সেই সঙ্গে যমুনা নদীর পানিও বাড়তে শুরু করেছে।” ”ফলে উত্তরাঞ্চলের আরও কিছু জেলা প্লাবিত হতে পারে। বন্যার এই পানিটা আবার নীচের দিকে নেমে এলে মধ্যাঞ্চলের কিছু জেলাও প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা আছে।”

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় তা দেশের কুড়িগ্রাম, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা থেকে প্রবেশে করে আরও এগিয়ে আসছে। ফলে জামালপুর, বগুড়া, শেরপুর, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, লালমনিরহাট, নীলফামারি ও পাবনায় বন্যা ছড়িয়ে পড়তে পারে। এছাড়া নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভিবাজারে বন্যা ছড়িয়ে পড়তে পারে। বন্যার পানি আরও নীচের দিকে নেমে এলে রাজবাড়ী, ফরিদপুর, শরীয়তপুর ইত্যাদি এলাকা প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

এদিকে, গতরাত থেকে সিলেটে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে ও বন্যার পানি বাড়তে থাকায় জনজীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে। এতে বন্যা কবলিত এলাকার লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যেতে কাজ করছে সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। নগর এলাকারও প্রায় অধিকাংশ স্থান বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় সেসব স্থানে বিভিন্নভাবে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন তারা। এছাড়া বন্যার পানি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের কাছাকাছি চলে এসেছে। এতে সিলেটের সঙ্গে সারাদেশ ও বিদেশের বিমান যোগাযোগ বন্ধ হতে যাচ্ছে।পাশাপাশি চলমান পরিস্থিতিতে সিলেট ছাড়তে রেলস্টেশনে ভির জমাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। সূত্রঃ বিবিসি