সীতাকুণ্ডের বিস্ফোরণের প্রভাব ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে!

কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বিপর্যস্ত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড। ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এত সময় পার হলেও এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন। অগ্নিকাণ্ডেএখন পর্যন্ত নিহত ৪৯ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে চারশত জন। তবে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের প্রভাব ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আফতাব আলী শেখ। তিনি বলেন, রাসায়নিক দূষণ এমন এক বিষয় এটা এক জায়গায় থেমে থাকে না। আমরা না দেখলেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আমাদের ক্ষতি করে। সীতাকুণ্ডের দূষণও ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছাবে।’

আজ সোমবার বিকালে (৬ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বিকালে পরিবেশ অধিদপ্তরের অডিটোরিয়ামে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে করণীয় বিষয়ক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। বিসিএসআইআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘ডিপোতে শুধু হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড থাকলে এ বিস্ফোরণ ঘটতো না। আমি নিশ্চিত সেখানে অন্য রাসায়নিক ছিল এবং যার যথাযথ ব্যবস্থাপনাও ছিল না। একাধিক রাসায়নিকের মিশ্রণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’ সভার শুরুতেই সীতাকুণ্ডে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এর আগে সেমিনারের মূল বক্তব্যে দেশের দূষণের পরিমাণ তুলে ধরেন বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যায়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার। বাপার যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাসের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সেভ আওয়ার সি’র পরিচালক এস এম আতিকুর রহমান, ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান, রিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা) সোলায়মান হায়দার, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মোহাম্মদ আলী নকী প্রমুখ।

এর আগে গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে বিএম কন্টেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে এক কন্টেইনার থেকে অন্য কন্টেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একটি কন্টেইনারে রাসায়নিক থাকায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, স্থানীয় শ্রমিকসহ অনেকে হতাহত হন। পরবর্তী সময়ে ইউনিট আরও বাড়ানো হয়। বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮৩ কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। এছাড়া নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।