দগ্ধ ছেলেকে স্ট্রেচারে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও দেখে তাকে চিনতে পেরেছেন তার মা। কিন্তু সন্তানকে দেখতে সীতাকুণ্ড যাওয়ার গাড়ি ভাড়া নেই তার কাছে। তার মা জানেনও না ছেলেকে কোন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভিডিওটি দেখে শুধু আহাজারি করছেন তিনি। সীতাকুণ্ডের আগুনে দগ্ধ ওই ছেলেটির নাম আল-আমিন (২২)। তিনি হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার পুটিজুরী ইউনিয়নের বাগেরখাল গ্রামের বাসিন্দা। আল-আমিন তার অন্য দুই বন্ধুর সঙ্গে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে কাজ করতেন।
স্থানীয়রা জানান, ডিপোতে বিস্ফোরণ-অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই আল-আমিন নিখোঁজ ছিলেন। রবিবার রাতে স্থানীয় এক যুবক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিওতে দগ্ধ অবস্থায় আল আমিনকে দেখতে পান। ভিডিওটি আল আমিনের মা সুজেনা বেগমের কাছে নিয়ে গেলে তিনিও তাকে নিজের ছেলে বলে শনাক্ত করেন।
পুটিজুরী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ছয় নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জসিম উদ্দিন জানান, ভিডিওটি দেখার পর থেকে সুজেনা বেগম তার ছেলের জন্য কান্না করছেন। ছেলেকে দেখার জন্য বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। কিন্তু ভাড়ার টাকা না থাকায় যেতে পারেননি। সোমবার (৬ জুন) ভাড়ার টাকা যোগাড় করে দিয়ে সুজেনা বেগমকে সেখানে পাঠাবো।
দগ্ধ আল আমিনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। সম্প্রতি ফাহিম ও রাজিব নামে দুই বন্ধুর সঙ্গে কনটেইনার ডিপোতে গিয়ে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। ঘটনার দিন রাতে শুধু আল অমিনের ডিউটি ছিল। দুই বন্ধু দিনের ডিউটি করে বাসায় চলে গিয়েছিলেন।
আল আমিনের বাবা সেফু মিয়া বলেন, আগুন লাগার পরপরই আল আমিন তার চাচা ফজলু মিয়ার মুঠোফোনে কল দিয়েছিলেন। তবে আগুন লেগে যাওয়ার খবর জানানোর পরক্ষণেই মুঠোফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে আর যোগাযোগ হয়নি। পুটিজুরী ইউপি চেয়ারম্যান মুদ্দত আলী বলেন, আল আমিনের পরিবারের সদস্যরা টাকার অভাবে চট্টগ্রামে যেতে পারছেন না। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের সহযোগিতা করব।