কেকের মৃত্যুর আসল কারণ জানা গেল

তিন দিন হয়ে গেল প্রয়াত হয়েছেন বলিউডের নামজাদা গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাত ওরফে কেকে। মরদেহ দেখে চিকিৎসকরা প্রথমে বলেছিলেন, হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে এই কণ্ঠশিল্পীর। এরপর তার কপাল ও থুথনিতে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেলে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে পুলিশ। করা হয় ময়নাতদন্ত। অবশেষে সেই রিপোর্ট থেকে জানা গেল মৃত্যুর আসল কারণ।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, হার্টের ব্লকেজের জন্য মারা গেছেন গায়ক কেকে। তার হৃদযন্ত্রের বাঁ-দিকের ধমনিতে ৭০ শতাংশ ব্লকেজ ছিল। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, নাচ-গান করতে গিয়ে অতিরিক্ত উত্তেজনায় তার হার্টের ব্লকেজ বেড়ে যায়। এতে আচমকাই রক্ত চলাচল বন্ধ হওয়ায় কার্ডিয়াক অ্যাটাক হয়। তাতেই উড়ে যায় প্রাণপাখি।

এ কথা আগেই জানা গেছে যে, অসুস্থ শরীর নিয়েই কলকাতায় গানের শো করতে এসেছিলেন কেকে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে নজরুল মঞ্চে যখন শো চলছিল, তখনও কেকে-কে অসুস্থ দেখাচ্ছিল। এসি চলা সত্ত্বেও তিনি বারবার ঘামছিলেন এবং তোয়োলে দিয়ে তা মুছছিলেন। সেই ছবি আর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ওই অবস্থায় শো চালু রেখেছিলেন গায়ক।

মঙ্গলবার টানা দুই ঘণ্টা পারফর্ম করেন কেকে। নিজের ২০টি জনপ্রিয় গান গেয়ে শোনান উপস্থিত দর্শকদের। কিন্তু এত মারাত্মক অসুস্থতা নিয়ে তিনি শো করতে এসেছিলেন, সে কথা কাউকে জানাননি। ম্যানেজার রীতেশ, যিনি কেকের সঙ্গে কলকাতায় এসছিলেন তিনিও জানতেন না। এমনকি, নিজের অসুস্থতার কথা গায়ক জানাননি তার স্ত্রী-সন্তানদেরও।

কেকের মৃত্যুর খবর পেয়ে বুধবার সকালে কলকাতায় ছুটে আসেন তার স্ত্রী জ্যোতিলক্ষ্মী কৃষ্ণা। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘মুম্বাই ছাড়ার আগে বারবার বলেছিল, শরীরটা ভালো নেই। আয়োজকদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়েছি। তাই শেষ মুহূর্তে পারফর্ম না করে পারছি না। ওর (কেকে) হাতে ব্যথা ছিল। তখনো বুঝতে পারিনি, ওর শরীরে বড় রোগ বাসা বেঁধেছে।’

গানের শো শেষ করে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে তার জন্য নির্ধারিত হোটেলে ফিরে যান কেকে। সেখানে তার বমি হয়। অচেতন হয়ে পড়ে যান মুখ থুবড়ে। তৎক্ষণাৎ নেওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, হোটেলে থাকতেই মৃত্যু হয়েছে কেকের। ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার তার মরদেহ নেওয়া হয় মুম্বাই। সেখানেই করা হয় শেষকৃত্য।

খ্যাতিমান এই গায়কের মৃত্যুতে শোকাহত গোটা ভারত। শোক জানান সকল ফিল্ম ইন্ডাস্টির তারকারা। শামিল হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। তারা পৃথক শোক জানান রাষ্ট্রীয়ভাবে। এছাড়া শোক জানান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীও। মৃত্যুর পর কেকে-কে কলকাতায় গান স্যালুট দেওয়া হয়। এরপর নেওয়া হয় মু্ম্বাইয়ে।