গায়ক কেকের মৃত্যুর পর বিস্ফোরক ভারতীয় চিকিৎসক

সুরের শহর কলকাতায় কনসার্ট করতে এসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলিউড গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ। সংক্ষেপে যিনি কেকে নামে অধিক পরিচিত। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি দেন। তার এই মৃত্যুর পর নজরুল মঞ্চ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন কুণাল সরকার নামে কলকাতার একটা চিকিৎসক। ওই নজরুল মঞ্চেই চলছিল কেকের লাইভ কনসার্ট।

মঙ্গলবার বিকাল থেকে ভিড়ে ঠাসা নজরুল মঞ্চে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে তিনগুণ লোক হয়েছিল সেখানে। তার মধ্যে আবার এসি কাজ করছিল না। একটা দমবন্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। শো-এর পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন কেকে। এমনকি শো চলাকালীনও তিনি অসুস্থ বোধ করছিলেন তিনি। কুল কুল করে ঘামছিলেন। বারবার রুমাল দিয়ে মুছছিলেন সেই ঘাম।

এ প্রসঙ্গেই ‘বিস্ফোরক’ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন চিকিৎসক কুণাল সরকার। তিনি সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন সরকারি নজরদারি নিয়ে। কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধতা নিয়ে। নজরুল মঞ্চকে তিনি ‘মৃত্যুফাঁদ’ও বলেছেন।

ওই চিকিৎসকের কথায়, ‘নজরুল মঞ্চ হচ্ছে পারফর্মারের জন্য একটা ‘মৃত্যুফাঁদ’। সিরাজ-উদ-দৌলার ‘ব্ল্যাকহোলে’র মত হয়ে দাঁড়িয়েছে নজরুল মঞ্চ। মঞ্চের মোট আসনসংখ্যা যত, দর্শকসংখ্যা তার ৫০ শতাংশের কম হলেও ভেন্টিলেশন, এসি দমবন্ধকর লাগে। সেখানে ৩-৪ গুণ ভিড়। এসি ভালো কাজ করলেও তার কোনো এয়ার এক্সচেঞ্জ নেই, তাপমাত্রার উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।’

কুণাল সরকার প্রশ্ন তুলেছেন, ‘একটা সরকারি জায়গায় কোনো নজরদারি নেই কেন? কেউ দেখতে পারছেন না যে একটা বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে? এসি বন্ধ করে দিতে হচ্ছে!’ চিকিৎসকের দাবি, ‘শেষ এক ঘণ্টা কেকে নাকি বলতে থাকেন, তার ভালো লাগছে না। ঘাম হচ্ছে!’ এমনকি ওই ভিড়, ওরকম দমবন্ধকর পরিস্থিতির মধ্যে ‘ক্রাউড’ নিয়ন্ত্রণ করতে মুখের উপর নাকি ফায়ার এক্সটিংগুইশারও ছোঁড়া হয়!

চিকিৎসকরা বলছেন, হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আগে শরীরে কিছু অস্বস্তি হতে পারে যেকোনো ব্যক্তির। ভীষণভাবে ঘামতে থাকেন ওই ব্যক্তি। মঙ্গলবার অনুষ্ঠানের সময় গায়ক কেকেও ঘামছিলেন। বার বার মুখ, কপাল, মাথা মুছে নিচ্ছিলেন রোমাল দিয়ে। পানি খাচ্ছিলেন ঘন ঘন।

এমনিতে কেকে অত্যন্ত স্বাস্থ্য সচেতন ছিলেন। সকালে উঠে জিম করতেন। সীমিত খাবার খেতেন। তবে অনুষ্ঠানের জন্য শেষ কয়েক মাস অত্যন্ত কাজের চাপ ছিল। পর পর শো, শুটিং, রেকর্ডিং চলছিল। জানিয়েছেন তার ম্যানেজার থেকে ঘনিষ্ঠরা।