ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে সবাইকে সহনশীল আচরণ করার অনুরোধ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেছেন, ক্যাম্পাসকে যারা অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি দেখতে চাই কাল কারা ক্যাম্পাসে রড, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঢোকে।
ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের সংঘর্ষের ঘটনা প্রসঙ্গে মঙ্গলবার (২৪ মে) রাতে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, আজ নজিরবিহীন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেছে কিছু সন্ত্রাসী। ক্যাম্পাসে ঢুকে সিনেট নির্বাচন বানচাল ও শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত করার চেষ্টা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কাজে বাধা দিয়েছে, গাড়ি ভাঙচুর করেছে। আমাদের নিরাপত্তা কর্মীদের ওপরও আঘাত করছে। এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইনগতভাবে কী করবে সে বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে ছাত্র-অছাত্র বুঝি না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কঠোর অবস্থান নেবে এবং শক্ত হাতে দমন করা হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেখতে চায় আগামীকাল কে লাঠি নিয়ে ঢুকতে চায়। আমি দেখতে চাই কাল কে ক্যাম্পাসে রড, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঢোকে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও কঠোর অবস্থানে যেতে বলা হয়েছে।
ঢাবি প্রক্টর আরও বলেন, আমাদের কোনো শিক্ষার্থী এগুলোর সঙ্গে জড়িত কি না আমরা তা তদন্ত করব। আমরা ছবি, ভিডিও সবকিছু দেখছি, দেখে আমরা বের করব। আমাদের কাছে কে কোন ছাত্র সংগঠনের সেটা বড় নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে যে বাধা দেবে, ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করবে, শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।
ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রক্টরিয়াল টিমে যারা আছেন তাদের বলব ক্যাম্পাসকে কেউ যেন অস্থিতিশীল করতে না পারে। বিভিন্ন ধরণের উস্কানি মূলক কাজ করতে না পারে। বাহিরের কোনো বিষয় সেটিও ক্যাম্পাসে এনে যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট না করে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।
আজ দিনভর ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করেছে। ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের প্রতিবাদ ও ছাত্রদলকে প্রতিহত করতে সকাল থেকে টিএসসিসহ ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে অবস্থান নিতে দেখা যায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের। এসময় তাদের হাতে লাঠি ও হকি স্টিক এবং ছাত্রদল বিরোধী স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সকাল সাড়ে ৯টার পর শহীদ মিনার এলাকা দিয়ে ছাত্রদল ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চাইলে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি তাদের। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কার্জন হল এলাকায় আবারও সংঘর্ষে জড়ায় দুই দল। এতে ছাত্রদলের ১০ জন এবং ছাত্রলীগের অন্তত ৩ জন আহতের খবর পাওয়া যায়।
ছাত্রদলের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মদদে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা করেছে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের হামলায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি তাদের। অপরদিকে ছাত্রলীগ নয় বরং সাধারণ ছাত্ররা ছাত্রদলের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিহত করেছে বলে দাবি ছাত্রলীগের। এছাড়া সকাল ৯টা থেকে অনুষ্ঠিত হওয়া সিনেট নির্বাচনেও এর প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষকরা।