প্রেমের সম্পর্কে বিয়ের দাবিতে বরগুনায় প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেয়া জামালপুরের সেই তরুণীকে জামিন দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নাহিদ হোসেন তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করে তরুণীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক কিসলু বলেন, সোমবার বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন আবেদন করেছিলাম। বিচারক নাহিদ হোসেন আবেদনটি গ্রহণ করে আজ বাদী ও বিবাদীর উপস্থিতিতে জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
তিনি আরো বলেন, জামালপুরের এই তরুণীর বিরুদ্ধে যেসব ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে, তার সবই জামিনযোগ্য। বিষয়টি আমি আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। বিকেলে ওই তরুণী কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ এপ্রিল বরগুনার চান্দখালীর এক ভাড়াটিয়া বাসায় থাকা মাহমুদুল হাসানের বাড়িতে এসে অবস্থান করে কথিত মৌ নামের তরুণী। ওই মেয়ের বাড়িতে আসার খবর পেয়েই দরজায় তালা দিয়ে পালিয়ে যান মাহমুদুল ও তার পরিবার। মৌ এসে দরজার সামনেই অবস্থান করেন, এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার প্রেমিক (মাহমুদুল হাসান) এসে বিয়ে না করলে তিনি আত্মহত্যা করবেন বলে গণমাধ্যমে প্রচার হয়।
বিয়ে করতে এসে কারাগারে, সেই তরুণীর জামিন
দুই দিন পার হয়ে যাওয়ার পর স্থানীয়দের সহায়তায় ঘরের তালা ভেঙ্গে ভেতরে অবস্থান করেন মৌ। পরে ছেলের মামা ঘটনাস্থলে আসলে তাকে আটকে রাখা হয়। প্রতিদিনের আপডেট প্রচার হচ্ছিল গণমাধ্যমে, একের পর এক সাক্ষাৎকার দিচ্ছে মৌ। এর ফলে বেরিয়ে আসতে শুরু করে তার আসল পরিচয়।
এক পর্যায়ে জানা যায়, মৌ-এর আসল নাম শিখা, তার বাড়ি জামালপুরে, তিনি ঢাকা অবস্থান করে একটা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকরি করেছেন। বিয়েও হয়েছিলে একজনের সাথে। সেখানে একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে।
এভাবে আরো তথ্য বেরিয়ে আসে গণমাধ্যমে। জানা যায়, কথিত মৌ নামের মেয়েটির এটি একটি ফাঁদমাত্র। অনেকের সাথে এরকম মিথ্যা পরিচয়ের ফাঁদ পেতে টাকা হাতিয়ে নেয়াই ছিলো তার নেশা। তারই ধারাবাহিকতায় মাহমুদুল হাসানের সাথে মিথ্যা পরিচয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এই নারী। বিভিন্নভাবে ছবি তুলে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টাও করেন।
অতঃপর বিষয়টি নজরে আসে বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সাইমুল ইসলাম রাব্বির। তিনি বলেন, আমি বিষয়টি আদালতের নজরে এনে আবেদন করেছিলাম। এরপর ১২ মে নতুন একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী পরিবার। বিষয়টি আমলে নিয়ে এজাহারের আদেশ দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয় আদালত।
পরে মাহমুদুলের পরিবারের করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয় শিখা আক্তার মৌকে।