গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে তরমুজের দাম কমে গেছে। ঈদের আগে যে তরমুজের দাম ৩০০ টাকা ছিল সেই তরমুজ এখন ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। হঠাৎ করে তরমুজের এমন দরপতনের কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তরমুজের ব্যাপক ক্ষতি হয়। অতিবৃষ্টি হওয়ায় চাষিরা বেশি পরিমাণে তরমুজ তুলে বাজারে সরবরাহ করছেন। এটি তরমুজের দাম কমার প্রধান কারণ।
এদিকে বাজারে এখন তরমুজ ছাড়াও বিভিন্ন মৌসুমী ফল পাওয়া যাচ্ছে যেমন আম, লিচু যা তরমুজের চাহিদায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আবার রোজার কারণেও কিছুদিন আগে তরমুজের বাড়তি চাহিদা ছিল, সেটা এখন নেই। সব মিলিয়ে রোজার সময়ের তুলনায় এখন তরমুজের চাহিদা অর্ধেকে নেমে গেছে। ফলে চাহিদা কমায় দামও কমে গেছে।
এদিকে রোজায় খুচরা বাজারে তরমুজ কেজি হিসেবে বিক্রি হলেও এখন পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। ৫-৬ কেজি ওজনের খুলনার একটি তরমুজ এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। ঈদের আগে এই তরমুজের পিস বিক্রি হয় ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকার ওপরে। এছাড়া এখন বড় তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে। ঈদের আগে এসব তরমুজের পিস বিক্রি হয় ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। আর ছোট তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৮০ টাকায়। যা ঈদের আগে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বিক্রি হয়।
তরমুজের দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মো. সালাউদ্দিন বলেন, ঈদের আগে থেকেই বাজারে খুলনার তরমুজ আসতে শুরু করেছে। এখন বাজারে যে তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে তার বেশিরভাগ খুলনার তরমুজ। আকারে ছোট হলেও এই তরমুজের চাহিদা বেশি। আর বরিশালের তরমুজ আকারে বড় ও দেখতে সুন্দর হলেও চাহিদা কম। ফলে বরিশালের তরমুজ তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, খুলনা ও বরিশালে সব ধরনের তরমুজের দাম এখন অনেক কমে গেছে। রোজার মধ্যে বরিশালের যে তরমুজ ৫০০ টাকা বিক্রি হয়েছে, এখন তা ২০০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে না। খুলনার কিছু তরমুজ ঈদের আগে ৪০০ টাকার ওপরে বিক্রি হয়েছে। সেই তরমুজ এখন ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
তরমুজের এই দাম কমার কারণ হিসেবে এই ব্যবসায়ী বলেন, ঈদের দিন থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টিতে তরমুজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চাষিরা লোকসানের হাত থেকে বাঁচতে ছোট-বড় সব ধরনের তরমুজ তুলে বিক্রি করে দিচ্ছেন। আবার রোজার কারণে অনেকে বেশি বেশি তরমুজ কেনেন, এখন তাদের অনেকেই আর কিনেছন না। এসব কিছু মিলিয়েই তরমুজের দাম কমে গেছে। সেগুনবাগিচায় তরমুজ কিনতে আসা নাঈম হোসেন বলেন, ২০০ টাকা দিয়ে তরমুজ কিনেছি। ঈদের আগে এই তরমুজ ৪০০ টাকা দিয়ে কিনতেও অনেক দর কষাকষি করতে হয়েছে। এখন তরমুজের দাম বেশ কম। কয়েকদিন আগে একটা তরমুজ কিনেছিলাম, ওটা বেশ মিষ্টি ছিল।
বাংলাদেশ ফ্রেস ফ্রুট ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও সাথী ফ্রেস ফ্রুটস লিমিটেডের মালিক সিরাজুল ইসলাম বলেন, রোজায় তরমুজের যে চাহিদা ছিল তা এখন নেই। আবার বৃষ্টির কারণে চাষিরা বেশি বেশি তরমুজ তুলছেন। এসব কারণেই তরমুজের দাম কমে গেছে। তিনি বলেন, তরমুজ নিয়ে চাষি, ব্যাপারী সবাই এখন বিপাকে আছেন।