মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন ডা. মকসেদুল মোমিন। প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন তার কাছে। প্রতিদিনের মতো বুধবার (১১ মে) দুপুরেও রোগী দেখছিলেন তিনি। তখন বাহিরে অপেক্ষারত কয়েকশ রোগী।
রোগীদের মধ্যে এক বৃদ্ধ নারীর সাথে বয়স্ক একজন পুরুষ অপেক্ষা করছেন। ডা. মকসেদুল মোমিন বৃদ্ধ বলে সবার আগে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ডেকে নেন সেই দুজনকে। দুজনের মধ্যে কে রোগী জানতে চাইলে বৃদ্ধা নারী জানান, তাঁর সাথের বৃদ্ধ লোক। সম্পর্কের বিষয়টি তিনি আর জানতে চাননি।
এমন সময় হঠাৎ বৃদ্ধ রোগীর একটি কথা ডা. মকসেদুল মোমিনের কানে আসে। তখন তিনি দেখেন ব্যবস্থাপত্র নিয়ে চলে যাওয়ার সময় ওই নারী তার সাথে আসা বৃদ্ধকে বলছেন, ‘উঠ, তাড়াতাড়ি চল’। কৌতুহল বশত ডা. মোমিন নারীকে জিজ্ঞেস করেন, সম্পর্কে কে হন তিনি।
নারী জানান, ১০০ বছর বয়সী ‘মা’ সাথে করে নিয়ে এসেছেন তার ৭০ বছর বয়সী ছেলেকে ডাক্তার দেখাতে। বিষয়টি জানাজানি হলে হাসপাতালে ভিড় জমে যায়। মায়ের ভালোবাসা বিরল দৃষ্টান্ত দেখে হতবাক হন সবাই।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলা এক রোগী জানান, হাসপাতালে এসে আজ বিরল ঘটনার সাক্ষী হলাম। মা তো মা-ই। মায়ের ভালোবাসা কখনো নিঃশেষ হয় না। সন্তান মাকে ছেড়ে যায়, কিন্তু মা সন্তানকে কোনো পরিস্থিতিতেই ছেড়ে যান না।
বিষয়টি ডা. মোমিন ছবি তুলে নিজের ফেসবুকে পোস্ট দিলে ভাইরাল হয়ে যায়। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাদের ঠিকানা পাওয়া সম্ভব হয়নি।
ওই নারীর বরাত দিয়ে ডা. মকসেদুল মোমিন বিডি২৪লাইভকে জানান, প্রতিদিনের মতো আমি রোগী দেখতেছিলাম। হঠাৎ বৃদ্ধ মহিলাদের চোখে পড়লে আমি ডেকে তাকে আগে চিকিৎসা সেবা দেই। পরে জানতে পারি সংসারে তাঁর সবাই আছে। তারপরেও ৭০ বছরের ছেলেকে নিজেই হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন চিকিৎসা করাতে। ছেলেটা অনেক দিন ধরে অসুস্থ।
তিনি আরো বলেন, বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে এসেছিলো। ভিড়ের ভেতর চিকিৎসা দেওয়ার সময় ছবি তুলেছি, বয়স জেনেছি। কিন্তু ঠিকানাটা নেওয়া হয়নি।