বিগত কয়েক বছরে মে মাসে বারবার আছড়ে পড়ছে ঘূর্ণিঝড়। মে মাস মানেই যেন ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার ভয়৷ আমফান, ইয়াস বা অশনি পর পর ঘূর্ণিঝড়গুলো সৃষ্টি হচ্ছে সেই মে মাসেই। মে মাসে কেন ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতা এত বেশি?
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০০৯ সালের মে মাসে আছড়ে পড়েছিল আয়লা। ২০১৯ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় ফণি এবং ২০২০ সালের মে মাসে এসেছিল আমফান। এমনকি গতবছরও মে মাসে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। আর এবার ধেয়ে আসছে অশনি।
এর কারণ হিসেবে আবহাওয়াবিদরা বলছেন, প্রাক বর্ষার মৌসুমে এপ্রিল এবং মে মাসই ঘূর্ণিঝড়ের উপযুক্ত মৌসুম। এর মধ্যে মে মাসে ঘূর্ণিঝড় সবথেকে বেশি হয়। মে মাসে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় হওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ থাকে। বেশ কয়েকটি কারণে উপরে এই ঘূর্ণিঝড় নির্ভর করে। সেগুলি হল-
সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রার উপর ঘূর্ণিঝড়ে সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নির্ভর করে। সাধারণত ন্যূনতম তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেই তা ঘূর্ণিঝড়ের জন্য উপযুক্ত। বর্তমানে বঙ্গোপসাগরের তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য তা অনুকূল।
অন্যদিকে, হাওয়া উপরের দিকে উঠতে থাকলেও ঘূর্ণিঝড় হওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়। গরম কালে তাপপ্রবাহের সময় হাওয়া উপর থেকে নীচের দিকে আসে। তাই ঘূর্ণিঝড় হওয়ার সম্ভাবনা কমে। এছাড়াও কোনও পূবালী হাওয়া, নিম্নচাপ বা ঘূর্ণাবর্ত থাকলেও তা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টিতে সাহায্য করে। হঠাৎ সমুদ্রপৃষ্ঠে ঘূর্নাবর্ত তৈরি হলে তা ঘূর্ণিঝড়ের জন্য অনুকূল পরিবেশ।
ঘূর্ণন অর্থাৎ ঘূর্ণিঝড়ের ঘূর্ণিপাক সংগঠিত হতে সাহায্য করে এরকম শক্তি সমুদ্রপৃষ্ঠে তৈরি হলেও ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে পারে। অনেক সময় দেখা গিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের উপরে এসে অনেক দুর্বল ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপও ফের সজীব হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন মহাসাগর থেকে কোনও ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপ বঙ্গোপসাগরের উপরে পৌঁছে তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্যও অনেক সময় ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে পারে।