কারফিউ জারি করেও নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না শ্রীলংকার পরিস্থিতি। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সরকার সমর্থকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে। তবে এবার বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে নতুন সতর্কবার্তা দিয়েছে শ্রীলঙ্কার সরকার। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কোনো বিক্ষোভকারীকে যদি সরকারি সম্পদ ধ্বংস করতে দেখা যায়, সেক্ষেত্রে তাকে গুলি করার এক্তিয়ার দেওয়া হয়েছে সেনা সদস্যদের।
মঙ্গলবার (১০ মে) প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে এই মন্ত্রণালয়ের প্রধান।এর আগে ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান গোতাবায়া রাজাপাকসের বড়ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে। তবে মাহিন্দা পদত্যাগ পত্র জমা দেওয়ার আগে ওই দিন সকালে তার সরকারি বাসভবন টেম্পল ট্রিজের সামনে সংঘাত হয় সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী ও সরকার সমর্থকদের। সেই সংঘাতের জেরে আরো উত্তাল হয়ে ওঠে শ্রীলঙ্কা। মাহিন্দা পদত্যাগ করার পরও তা প্রশমিত হয়নি। সোমবার দেশজুড়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী এবং পুলিশ ও সরকার সমর্থকদের মধ্যে। এতে নিহত হয়েছেন ৭ জন, আহত হয়েছেন আরও দুই শতাধিক।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে প্রথমে কলম্বো ও পরে দেশজুড়ে কারফিউ ঘোষণা করেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট। কিন্তু জনগণ সেই কারফিউ না মেনে আরও সহিংস হয়ে ওঠে। সোমবার সন্ধ্যার পর শ্রীলঙ্কার উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কুরুনেঙ্গালায় মাহিন্দা রাজাপাকসের ব্যক্তিগত বাসভবন আগুনে পুড়িয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। এছাড়া এই দিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার অন্তত ৪১ জন মন্ত্রী, সরকাদলীয় এমপি ও জনপ্রতিনিধির বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়, মাঝরাতের পর হামলা করা হয় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন টেম্পল ট্রিজেও। হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারী টেম্পল ট্রিজের ফটক ভেঙে ঢুকে পড়ে। দেশটির সামরিক বাহিনীর তৎপরতায় পরে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে খারাপ আর্থিক সংকটের মোকাবেলা করছে শ্রীলঙ্কা। অর্থনীতি পরিচালনায় ভুল ব্যবস্থাপনার কারণে প্রেসিডেন্ট গোটাবায় ও তার প্রভাবশালী পরিবারকে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার দাবি জানাচ্ছে ভারত মহাসাগরীর দ্বীপ দেশটির হাজার হাজার সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গোটবায়ার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ আরও প্রবল হয়ে উঠেছে।