রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর ফোনেই বরখাস্ত হন টিটিই শফিকুল!

রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের স্ত্রী শাম্মী আক্তার মনির ফোনেই ট্রেনের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) শফিকুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন মন্ত্রীর স্ত্রীর মামাতো বোন ইয়াসমিন আক্তার নিপা। একটি বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে এমন তথ্য। বিনা টিকিটে এসি কেবিনে ওঠে মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেওয়া সেই তিন যাত্রীর একজন ইমরুল কায়েস প্রান্তের মা হলেন ইয়াসমিন আক্তার নিপা।

শনিবার নিপা আক্তার বলেন, ছেলেদের সঙ্গে ‘অসদাচরণ’ করার কারণে টিটিইকে তিনি বদলি করতে মন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আক্তারকে বলেছিলেন। তখন শাম্মী তাকে জানান, বদলি না বরখাস্তই করে দিচ্ছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি রেলের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ফোন করে বরখাস্ত করতে বলেন।

নিপা আরো বলেন, আমার ছেলে ও তার দুই চাচাতো ভাই টিকিট কেটেই ট্রেনে ওঠেছিল। ট্রেনের এসি কেবিনের সিট ফাঁকা থাকায় গার্ডের অনুরোধে সেখানে গিয়ে বসে। তখন টিটিই শফিকুল ইসলাম এসে টিকিট দেখতে চান। এসি কেবিনের টিকেট না পেয়ে টিটিই তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এরপর তারা নিজেদের রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেন। তখন টিটিই আরো খেপে যান। নিপা বলেন, ঘটনার পরপরই যদি টিটিই শফিকুল ফোন করে বলতো যে, তার ভুল হয়ে গেছে। বুঝতে পারিনি। স্যরি-ট্যরি বললে বিষয়টা ঠিক হয়ে যেতো। কিন্তু তিনি তা না করে, বিষয়টিকে ভাইরাল করে দিয়েছেন।

জানা গেছে, গত শুক্রবার (৫ মে) রাতে পাবনার ঈশ্বরদী স্টেশন থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর ভাগ্নে পরিচয় দেওয়া তিন যাত্রী। তারা হলেন, মন্ত্রীর স্ত্রীর মামাতো বোনের ছেলে ইমরুল কায়েস প্রান্ত ও তার চাচাত ভাই ওমর ও হাসান। টিকিট না থাকলেও এই তিন জন খুলনা থেকে রাত ৮টায় ছেড়ে যাওয়া সুন্দরবন এক্সপ্রেসের এসি কেবিনের আসনে বসেন। তখন টিটিই শফিকুল ইসলাম তাদের কেবিন থেকে বের করে শোভন বগিতে পাঠান এবং ৩৫০ টাকা করে জরিমানা করেন। এরপরই ট্রেন ঢাকায় পৌঁছার আগেই ভোররাতে টিটিইকে সাময়িক বরখাস্ত করে মোবাইল ফোনে জানিয়ে দেওয়া হয়।

রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর নানাবাড়ি ঈশ্বরদীতে। প্রান্তের মা ইয়াসমিন নিপা একই শহরের নুরমহল্লা কর্মকার পাড়ার। দুই বোন এবার একসঙ্গে একই বাড়িতে ঈদ উদযাপন করেছেন বলেও জানা গেছে।