ক্রমবর্ধমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভ মোকাবিলায় শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে আবারো জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। দেশটিতে পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। এর মাধ্যমে নিরাপত্তা বাহিনীর ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র জানান, জনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে জরুরি আইন জারি করা হয়েছে। এর আগে তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেই শুরু হয় বিক্ষোভ ও ধর্মঘট। বন্ধ থাকে স্কুল-কলেজ, দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া ধর্মঘটের কারণে পরিবহন ব্যবস্থাও অচল হয়ে পড়ে। এদিকে ছাত্রদের বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে গতকাল জাতীয় সংসদের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে তারা।
চলতি সপ্তাহে দেশটির অর্থমন্ত্রী জানান, গোতাবায়ে রাজাপাকসে সরকারের কাছে পাঁচ কোটি ডলারের মতো বৈদেশিক রিজার্ভ অবশিষ্ট রয়েছে। মূলত করোনা মহামারি ও তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশটির অর্থনীতিতে ধস নামে। দেশটির ট্রেড ইউনিয়ন নেতা রবি কুমুদেশ বলেন, রাষ্ট্রপতির ভুল নীতি ও পদক্ষেপের ফলেই এমন দুঃখজনক অবস্থা তৈরি হয়েছে। তাই তাকে পদত্যাগ করতে হবে।
মূলত, করোনা মহামারি, ক্রমবর্ধমান তেলের দাম এবং প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে সরকারের ট্যাক্স কমানোর কারণে তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের কবলে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। আমদানিকৃত খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের ঘাটতির কারণে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিক্ষিপ্তভাবে সহিংস সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হচ্ছে। দেশটির অর্থমন্ত্রী চলতি সপ্তাহে জানিয়েছেন, শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক রিজার্ভ এখন মাত্র পাঁচ কোটি ডলার।
শুক্রবার দেশের বড় বড় শহরগুলোতে দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বেসরকারি বাস ও ট্রেন অপারেটররা ধর্মঘটে যোগ দেওয়ার কারণে যাত্রীরা আটকা পড়েছিলেন। কলম্বোর প্রধান ট্রেন স্টেশনটি শুক্রবার সকালে বন্ধ ছিল এবং কাছাকাছি টার্মিনালে শুধুমাত্র সরকারি বাস চালু ছিল। স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরাও ধর্মঘটে যোগ দেন, যদিও জরুরি পরিষেবা চালু ছিল।