এবার হজে কারা যেতে পারবেন, নির্দেশনা জারি

করোনার কারণে গত দুই বছর বিদেশিদের হজে যাওয়া বন্ধ ছিল। করোনাভাইরাস মহামারী এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক না হলেও এরই মধ্যে কিছুটা কম সংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসলিম নিয়ে এবার হজ আয়োজন করতে যাচ্ছে সৌদি আরব। আর এজন্যই চলতি বছরে হজযাত্রীদের বয়স নির্ধারণসহ বেশকিছু নির্দেশনা জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চলতি বছর হজে গমনেচ্ছু এবং সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, কোভিড পরিস্থিতি বিশ্বের সব দেশে এখনো সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি। এ অবস্থায় চলতি বছর বিশেষ পরিস্থিতিতে এবং স্বল্পতম সময়ের প্রস্তুতিতে হজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সুষ্ঠুভাবে হজ অনুষ্ঠানে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৯ জুলাই সৌদিতে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ বছর বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে পারবেন ৫৭ হাজার ৮৫৬ জন। স্বল্প সময়ের মধ্যে এবারের হজের জন্য নতুনভাবে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করে ভিসা আবেদন করতে প্রস্তুতি সম্পন্ন করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

হজে গমনেচ্ছু ব্যক্তি এবং হজ কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট সবার অবগতি এবং প্রস্তুতি গ্রহণের লক্ষ্যে দেওয়া নির্দেশনাগুলো হলো-

(ক) ১৪৪৩ হিজরি/২০২২ সনের হজে ৬৫ বছরের (পাসপোর্ট অনুযায়ী যাদের জন্মতারিখ ১ জুলাই, ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দ এবং পরবর্তী) কম বয়সী ব্যক্তিই কেবল হজ পালনের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

(খ) ১৪৪১ হিজরি/২০২০ খ্রিষ্টাব্দে সব সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধিত হজযাত্রী ১৪৪৩ হিজরি সনে হজে যাবার সুযোগ পাবেন।

(গ) ১৪৪১ হিজরি/২০২০ খ্রিষ্টাব্দে ৬৫ বছরের বেশি বয়সী (পাসপোর্ট অনুযায়ী যাদের জন্মতারিখ ৩০ জুন, ১৯৫৭ বা পূর্বে) নিবন্ধিত হজযাত্রী/ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কেউ হজে যেতে আগ্রহী হলে তিনি উক্ত শূন্য কোটায় অগ্রাধিকার পাবেন। সরকারি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ঢাকার হজ অফিসের পরিচালকের কাছে অনতিবিলম্বে বদলি হজযাত্রীর পাসপোর্টসহ আবেদন করতে হবে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আগ্রহীরা যোগ্য স্ব স্ব হজ এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। উভয় ক্ষেত্রেই প্রস্তাবিত ব্যক্তির প্রাক-নিবন্ধন করতে হবে।

(ঘ) স্বল্পতম সময়ের মধ্যে ২০২২ সালের হজের জন্য নতুনভাবে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করে ভিসা আবেদন করার লক্ষ্যে নিম্নোক্ত বিষয়ে প্রস্তুতি সম্পন্ন করার জন্য অনুরোধ করা হলো।

(১) ২০২০ সনের নিবন্ধিত সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীগণ ২০২২ সনের হজ প্যাকেজ ঘোষণার ৩ কার্যদিবসের মধ্যে যেকোনো নিবন্ধন কেন্দ্র থেকে প্যাকেজ স্থানান্তর সম্পন্ন করবেন। এজন্য, ২০২০ সনে পরিশোধিত প্যাকেজ মূল্য সমন্বয় করে ২০২২ সনের যেকোনো একটি প্যাকেজের অবশিষ্ট অর্থ ভাউচারের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকে জমা করতে হবে। প্যাকেজ স্থানান্তর/নিবন্ধনের ৩ দিনের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের স্ব স্ব পাসপোর্ট নিজ দায়িত্বে বিনা ব্যর্থতায় হজ অফিস ঢাকায় জমা দিতে হবে।

(২) বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২০২০ সনের নিবন্ধিত হজযাত্রীগণ নিজ নিজ এজেন্সি ঘোষিত প্যাকেজ (সরকারি ব্যবস্থাপনার সর্বনিম্ন প্যাকেজের নিম্নে নয়) দ্রুত নির্ধারণ ও অবশিষ্ট অর্থ পরিশোধ করে এজেন্সির সহায়তায় হজে গমনের কার্যক্রম গ্রহণ করবেন।

(৩) নিবন্ধন নিশ্চিত করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় হজে গমনেচ্ছুগণ পাসপোর্টের মেয়াদ যাচাই করে কমপক্ষে ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদযুক্ত পাসপোর্ট প্রস্তুত রাখবেন। যাদের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে বা নতুন করে পাসপোর্ট করতে হবে, তারা অতীব জরুরি ভিত্তিতে পাসপোর্ট করবেন।

(৪) হজের সময়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের নিয়ম মোতাবেক প্রতিটি স্থানে গ্রুপভিত্তিক চলাচল করতে হবে।

(৫) হজের সফরের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাজকীয় সৌদি সরকারের প্রবর্তিত নিয়ম অনুসারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

(৬) করোনার ভ্যাকসিন এবং ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ গ্রহণ করে টিকা গ্রহণের সার্টিফিকেট হজের পুরো সফরে ব্যবহারের লক্ষ্যে একাধিক কপি/আইডি কার্ড আকারে লেমিনেটেড কপি প্রস্তুত রাখবেন।

(৭) নিবন্ধন ব্যতিত কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে থাকলে অথবা ‘সুরক্ষা’ অ্যাপসে টিকা নেওয়ার তথ্য আপডেট নেই, এমন হজযাত্রীকে টিকা গ্রহণের তথ্য ‘সুরক্ষা’ অ্যাপসে অন্তর্ভুক্তিক্রমে টিকার সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হবে। অর্থাৎ টিকা গ্রহণ করলেই চলবে না, টিকা গ্রহণের সার্টিফিকেট অবশ্যই সঙ্গে নিতে হবে।

(৮) হজে গমনের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোভিড পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট সঙ্গে নিতে হবে।

(৯) হজযাত্রীগণ নিয়মিত সেবন করেন, এরকম কোনো ওষুধ সৌদি আরবে নেওয়ার প্রয়োজন থাকলে তা অবশ্যই রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের/হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্র সঙ্গে করে লাগেজে বহন করবেন। কোনো প্রকার ব্যবস্থাপত্রবিহীন ওষুধ সঙ্গে নেওয়া যাবে না।

(১০) হজযাত্রী, গাইড বা সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি জর্দা, গুলসহ নেশাজাতীয় দ্রব্য সঙ্গে নিতে পারবেন না।

(১১) সৌদি সরকারের নিয়ম অনুযায়ী সৌদি আরব হতে প্রত্যাগমনের সময় ৬০ হাজার সৌদি রিয়ালের অধিক নগদ অর্থ বা সমমূল্যের স্বর্ণালংকার বা মূল্যবান কোনো দ্রব্যাদি বহন করলে উক্ত যাত্রীকে সৌদি স্থানীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে এবং মূল্যবান দ্রব্যাদি ক্রয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল ভাউচার প্রদর্শন করতে হবে।