বগুড়ার বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে রান্নার অতি প্রয়োজনীয় জিনিস ভোজ্য তেল সায়াবিন। কোম্পানি থেকে দেওয়া হচ্ছেনা তেল। কিছু কিছু ডিলারের গোডাউন ভর্তি তেল রেখে কোম্পানি না দেওয়ায় তেলের সংকট দেখিয়ে আদায় করছে অতিরিক্ত টাকা। এ কারনে ভোক্তাদের মাঝে সয়াবিনের জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে। মানুষ বাজারে ভোজ্য তেল সয়াবিন না পেয়ে বিকল্প সরিষার তেল নিয়ে বাড়ি ফিরছেন অনেকেই।
মাঝে মাঝে প্রশাসনের বাজার মনিটরিং ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অব্যহত থাকলেও বেপরোয়া ব্যবসায়ীরা। সরকারি মূল্যে তেল বিক্রি করতে নারাজ তারা। সয়াবিন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তীর, রুপচাঁদা, ও ফ্রেস ডিলারদের নিকট থেকে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। এই কারনে সয়াবিনের সংকট দেখা দিয়েছে। সয়াবিন যদিও বা পাওয়া যাচ্ছে তা মধ্যবিত্ত মানুষের নাগালের বাইরে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বগুড়া রাজা বাজার, ফতেহ আলী বাজার এলাকার ডিলার, আজাদ, বাবলু, রাজু আহম্মেদ, মোফাজ্জল জানান, কোম্পানি কোন তেল বাজারে দিচ্ছে। এজন্য সংকট দেখা দিয়েছ। তেল না পাওয়া কারনে ৫ লিটার তেলের বোতলে মুল্য নেওয়া হচ্ছে ৮৫০টাকা। তবুও পাওয়া যাচ্ছে না। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা ব্যবযায়ীদের মাঝে আকাশ পাতাল তফাত তেলের দাম।
বাজার ঘুরে খুচরা বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে মজিদ, রাকা, আনন্দ জানান, সরকারের বেধে দেওয়া পাম অয়েলের খুচরা মূল্য ১৩০টাকা যা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকা কেজি, খোলা সয়াবিন তেল খুচরা সর্বোচ্চ মুল্য ১৪৩ টাকার স্থলে পাইকারি ১৯০ টাকা, ১ লিটারের পাইকারি প্যাকেট ১৬০ টাকা বোতলজাত তেল পাইকারি ১৬৫টাকা এবং খুচরা ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা।
সয়াবিন তেলের রুপচাদার পরিবেশক নিমাই চন্দ্র কর্মকার জানান, কোম্পানী থেকে তাদের সয়াবিন সরবারাহ করা হচ্ছে না। অগ্রীম ১৫ লক্ষ টাকা দিয়েছি তবুও তেল দেওয়া হচ্ছেনা। তাই গত বৃহস্পতিবার থেকে দোকান বন্ধ রেখেছি।
সয়াবিন তেলের ফ্রেসের পরিবেশক ভাই ভাই ষ্টোরের সত্বাধীকারি শুশীল চন্দ্র মহন্ত জানান, আমি ২৩ দিন আগে ৩৮ লক্ষ টাকা কোম্পানিকে দিয়েছি। কোম্পানি তেল দিচ্ছেনা। দাম বাড়বে কি কমবে তাও জানিনা। তবে ঈদের পর দেওয়ার কথা বলেছে। এমনই তীর কোম্পার আরেক পরিবেশক কমল দত্ত জানান, তেল দেওয়ারতো দুরের কথা কোম্পানির সঙ্গে ঠিকমত কথা বলাও যাচ্ছেনা। অগ্রীম টাকা দিয়ে আমরা ১৫দিন ধরে এখন অসহায় হয়ে পড়েছি। এদিকে বাজারে প্রচুর তেলের চাহিদা। বিক্রয় করতে পারছিনা।
নাম প্রকাশ না কারার স্বার্থে অনেক খুচরা দোকানি জানান, প্রত্যেক পরিবেশকের গোডাউন ফাকা রেকে তাদের বাড়ী ও আত্মীয় স্বজনদের বাড়ীতে তেল মজুদ রেখেছ। আজই আমি এক টাটুন রুপচাদা তেল প্রতি লিটার পরিবেশক থেকে নিয়ে এসেছি ১৭০টাকা করে। তেলে বোতলে দাম রয়েছে ১৬০টাকা কিন্তু কিছু করার নেই। আমরা খুচরা বিক্রেতা অসহায় একপ্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছি পরিবেশকদের কাছে। তবে পাইকারি অনেক ব্যবসায়ী তেল তাদের গোপন গুদামে মজুদ করে ফেলেছেন।
এদিকে বাজারে খোলা ড্রামের তেল ১৮৮ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে সয়াবিন সংকটের কারনে নিত্য প্রয়োজনীয় এই সয়াবিন তেলের পরিবর্তে বিকল্প হিসাবে সরিষার তেলের দিকে ঝুকেছে অনেকেই।
এ বিষয়ে বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসার আশরাফুজ্জামান জানান, মুলত এই তেলের বাজার নিয়ন্ত্রন করবে বানিজ্যমন্ত্রনালয়। বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিয়ন্ত্রন করবে।