মার্কিন প্রতিবেদনে তথ্যের গরমিল রয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিরাপত্তা বাহিনীর ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেখানে তথ্যের গরমিল রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, আমি এখনো জোর গলায় বলতে পারি, যে রিপোর্টটা বের হয়েছে, তাতে তথ্য বিভ্রাট হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন থেকে দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন তখন থেকে কোনো ধরনের অন্যায়-অত্যাচার নিরাপত্তা বাহিনী করলে, আইনের মুখোমুখি হতে হয়। আমি সেটাই বারবার স্পষ্ট করে বলছি।

বুধবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রথম কথা হলো অভিযোগটা বোধ হয় ২০২১ সালের, ২০২২ সালের নয়। ২০২১ সালে যে পরিমাণ গুম-খুনের কথা বলা হচ্ছে, আমাদের রেকর্ডে কিন্তু সেই পরিমাণ নেই। আমরা সব সময়ই আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা যদি কেউ বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়, নিরাপত্তা বাহিনী আত্মরক্ষার ভয়ে যদি গুলিও করে তাহলে প্রত্যেক ঘটনায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইনকোয়ারি করেন। এতে যদি ঘটনার সত্যতা প্রমাণ হয় তাহলে বিষয়টি আমরা ক্লোজ করে দিই। আর যদি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনে করেন এখানে ঘটনাটি অন্যায় বা অসতর্কতায় হয়েছে, এটা আমরা বিচার বিভাগে পাঠিয়ে দেই।

তিনি বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, জেলখানায় আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর ইন্সপেকটর লেভেল থেকে ডিআইজি লেভেল পর্যন্ত কর্মকর্তা আটক রয়েছেন। এটাই শুধু নয়, র‌্যাবেরও অনেক সদস্য রয়েছেন। এর অর্থ কেউই বিচারের ঊর্ধ্বে নয় আমাদের দেশে। এখানে যেই অন্যায় করে তাকেই বিচারের মুখোমুখি হতে হয়। আমি মনে করি, এটা তারা যেটা করেছে (মার্কিন প্রতিবেদন), তাদের তথ্যবিভ্রাট হয়েছে বলে আমি মনে করি।

প্রতিবেদনে নিরাপত্তা বাহিনী রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে—এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এটা হতো বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল। পেছনের কথা যদি তারা বলে, এটা আমার জানা নেই। গুম-খুনের কথা যেগুলো বলছে, এগুলো প্রায়ই অনুসন্ধান করে আমরা দেখেছি, তারা অনেকেই হয়তো আত্মগোপন করে গুম বলে চালিয়ে দিয়েছেন। হয়তো ব্যবসায়ে লস করে নিজেই কোথাও চলে গেছেন। এই কিছুদিন আগেও আপনারা দেখেছেন, এক লোক আড়াই বছর পর বলেছেন, ইচ্ছা করেই গুম হয়েছিলেন পরিবারের অশান্তির কারণে। আমরা নিরাপত্তা বাহিনী অনেককেই খুঁজে বের করে দিয়েছি।

গুজব প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিটিআরসি ফেসবুকের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে। আমরা কালকেও তাদের সাথে এ নিয়ে আলাপ আলোচনা করেছি। তারা বলেছে, ফেসবুকের সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধিরা আমাদের এখান থেকে এসে ঘুরে গিয়েছেন। একটা সুপারিশ যেটা আমরা করেছি, তারা সেটার বাস্তবায়ন করবে বলে আমাদের বলেছে।

তিনি বলেন, ফেসবুক সম্পর্কে আপনাদের মাধ্যমে আমি বলতে চাই, যারা ফেসবুকে এসব প্রচার করেন তাদের বিরুদ্ধে কিন্তু আমরা ব্যবস্থা নিই। কেউ যদি সংক্ষুব্ধ হয়ে বিচার চায় তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবশ্যই নেবো। মানুষ এখন ধীরে ধীরে টের পাচ্ছে, এসব গুজব ইচ্ছাকৃতভাবে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এ কারণে ফেসবুককে কিন্তু এখন বিশ্বাসও করে না। মানুষ বিশ্বাসের আগে যুক্তিটা জানতে চায়। তথ্যটা জানতে চায়।

পহেলা বৈশাখের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বলছি, যেহতু কোভিড এখনো শতভাগ যায়নি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী কিন্তু এখনো বাসা থেকেই সব কাজ করেন। কাজেই সবাইকে বলবো কোভিডের বিষয়টি মাথায় রেখেই তারা যেন সবাই এটাকে সীমিত আকারে করেন। দুপুর ২টা পর্যন্ত আয়োজনের বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সুপারিশ করেছে।