২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এবারের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ৭৯ হাজার ৩৩৯ জন। পাসের হার শতকরা ৫৫ দশমিক ১৩ ভাগ।
দিনমজুরের মেয়ে শাবনূরের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নে অন্তরায় হয়ে দাড়িয়েছে দারিদ্রতা। মেয়ের সাফল্যে বাবা-মায়ের আনন্দের পাশাপাশি বেড়েছে দুশ্চিন্তা।
পড়ালেখার খরচ চলবে কিভাবে আর ভর্তিই বা হবে কিভাবে এমন দুশ্চিন্তায় এখন দিশেহারা শাবনূরের বাবা দিনমজুর বাবুল মোল্লা ও মা সাবিনা বেগম।
বাবুল মোল্লা বলেন, ‘মাইয়াডা মেডিকেলে চান্স পাইছে। ক্যামনে যে অরে ভর্তি করমু আর ক্যামনে পড়ামু আল্লায় জানে’।
পিরোজপুরের স্বরূপকাঠী উপজেলার দক্ষিণ কামারকাঠী গ্রামের দিনমজুর বাবুল মোল্লার মেয়ে শাবনূর এ বছর জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তার এ সাফল্যে এলাকাবাসীসহ পরিবারের সবাই খুশি।
সোমবার দক্ষিণ কামারকাঠী গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ছোট্ট টিনের ঘরে তিন সন্তান নিয়ে বসবাস করেন বাবুল মোল্লা। সর্বত্র দারিদ্রতার ছাপ। বাবুল মোল্লা বলেন, আমার এক ছেলে, দুই মেয়ে। আমি একজন দিনমজুর। অসুস্থতার কারনে ঠিকমতো কাজ করতে পারি না। স্ত্রী সাবিনা বেগম গৃহীনি।
আমার একার আয়ে পরিবারের ভরণপোষণ মেটাতে কষ্ট হয়। তার ওপর তিন ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাতে খুব কষ্ট হয়। অসুস্থতার কারণে আগের মতো কাজ করতে পারি না, এজন্য মাঝেমধ্যে শাবনূরের মাও অন্যের বাড়িতে কাজ করে। ‘
শাবনূরের মা সাবিনা বেগম চোখের আনন্দাশ্রু মুছতে মুছতে বলেন, ‘এমন দিনও গ্যাছে ঘরে খাওন না থাহায় মাইয়াডা না খাইয়া কলেজে গ্যাছে। অভাবের লইগ্যা মাইয়াড্যারে কলেজে আওয়া-যাওয়ার খরচও দেতে পারি নাই। রোজ এক ঘণ্টা হাইট্টা কলেজ করতো। এহন ক্যামনে যে পড়ামু বুঝি না।’
শিক্ষার্থী শাবনূর বলেন, ‘আবার বাবা একজন দিনমজুর। অনেক কষ্টে আমাদের সংসার চলে। আমি প্রাথমিক শিক্ষা
জীবন থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত আসতে শিক্ষক-সহপাঠীদের অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা পেয়েছি। সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহ আলম আমাকে বিনামূল্যে কলেজে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।