গত কয়েকদিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়। তেজগাঁও কলেজের এক শিক্ষককে টিপ নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন এক পুলিশ সদস্য। সে ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হলে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল তারেককে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। তবে এর রেশ না কাটতেই এবার টিপকাণ্ড নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন সিলেটের এক পুলিশ কর্মকর্তা। ফেসবুক পোস্টে তিনি নারীর পোশাক নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন এবং টিপ ইস্যুতে প্রতিবাদকারী পুরুষদের নিয়ে নেতিবাচক কথা বলেন।
যদিও তিনি ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দিয়ে কয়েক ঘণ্টা পর সেটি ফেসবুক থেকে মুছে ফেলেছেন। ওই পুলিশ পরিদর্শক সিলেট জর্জ কোর্টে কর্মরত রয়েছেন। তার এমন ফেসবুক পোস্টে ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন সচেতন নাগরিকরা। তারা তাকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে অপসারণেরও দাবি তুলেছেন।
আজ সোমবার (৪ মার্চ) দুপুরে লিয়াকত আলী তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি লেখা পোস্ট করেন। সেখানে তিনি টিপ ইস্যুতে প্রতিবাদ করা পুরুষদের নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘প্রসঙ্গ : টিপ নিয়ে নারীকে হয়রানি। ফালতু ভাবনা: (১৮+) টিপ নিয়ে নারীকে হয়রানি করার প্রতিবাদে অনেক পুরুষ নিজেরাই কপালে টিপ লাগাইয়া প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কিন্তু আমি ভবিষ্যৎ ভাবনায় শঙ্কিত। বিভিন্ন শহরে অনেক নারীরা যেসব খোলামেলা পোশাক পরে চলাফেরা করেন, তার মধ্যে অনেকেরই…’’ (বাকি অংশ ছাপানোর উপযোগী নয়)।
পুলিশের একজন কর্মকর্তার এমন মন্তব্যে হতবাক সিলেটের সুশীল সমাজ। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, টিপ নিয়ে একজন পুলিশের আপত্তিকর মন্তব্যে যেখানে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে সারা দেশ, সেখানে সিলেটের মতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শহরে দায়িত্ব পালন করা একজন পুলিশ সদস্যের এমন মন্তব্য উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এমন চিন্তা-চেতনার লোক রাষ্ট্রের মূলনীতি বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। তাই পুলিশের মতো সংবেদনশীল বিভাগ থেকে লিয়াকত আলীর মতো ব্যক্তিদের অপসারণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, কপালে টিপ পরা নিয়ে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় এক শিক্ষিকাকে হেনস্তার ঘটনায় এক পুলিশ কনস্টেবলকে চিহ্নিত করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আজ ৪ এপ্রিল (সোমবার) ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার সোমবার সকালে এ তথ্য জানান।