সন্তানদের সময় দিতে মৎস্য কর্মকর্তার পদ ছেড়ে অবসরে মা

পেশাগত জীবনে সাফল্যের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে সন্তানদের প্রতি দায়িত্ববোধ ও ভালোবাসা থেকে বিসিএস ক্যাডার হয়েও স্বেচ্ছায় অবসর চাইলেন এক মা। তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জান্নাত ই হুর (সেতু)। গত বৃহস্পতিবার ১০ বছরের কর্মজীবনের ইস্তফা দিয়ে ফিরে গেলেন সংসারের মায়াজালে। সন্তানদের আরও বেশি সময় দিতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানান তিনি। ব্যক্তিজীবনে তিন কন্যাসন্তানের জননী জান্নাত। স্বামী সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সানোয়ার রাসেল ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত।

জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহ থেকে ২০১১ সালে তিনি মাস্টার্স শেষ করেন। একই বছর ২৯তম বিসিএস ক্যাডার হিসেবে উত্তীর্ণ হন জান্নাত ই হুর (সেতু)। সে বছরই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন সহপাঠী সানোয়ার রাসেলের সঙ্গে। জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলায় বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তরে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। ২০১৫ সালে বদলি হয়ে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন ময়মনসিংহের গৌরীপুরে। তিনি শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী উপজেলার রাণীশিমুল গ্রামের মো. জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে।

জান্নাত ই হুর সেতু জানান, স্বামী-স্ত্রী দুজনই সরকারি চাকরি করেন। পেশাগত কারণে খুব ব্যস্ত সময় পার করতে হয় তাঁদের। এদিকে সন্তানেরা বাবা-মায়ের স্নেহ-মমতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ওদের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়ছে জীবনে। নানান দিক চিন্তা করেই তিনি চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গত জানুয়ারিতে তিনি আবেদন করেছেন সরকারের কাছে, গতকালও আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পাননি। তবে আজ থেকে তা কার্যকর হওয়ার কথা। তাই তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার কর্মস্থলে সহকর্মীদের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায় নিয়েছেন।

এদিকে কর্মজীবনের ইস্তফা ও নতুন জীবন শুরুর দিনটিকে স্বাগত জানিয়েছে তাঁর তিন সন্তান ও পরিবারের লোকজন। তারা বাসা বেলুন দিয়ে সাজিয়ে, ফুলের তোড়া ও কেক কেটে বরণ করে নিয়েছে জান্নাত ই হুর সেতুকে।