করোনার সংক্রমণ বেশ কিছু দেশ কমলেই এখনো ভয়াবহ অবস্থা রয়েছে ইউরোপে। এখনও পর্যন্ত ইউরোপে করোনায় মৃত্যু হয়েছে১৫ লক্ষ ১৩ হাজারেরও বেশি মানুষের। রাশিয়ার পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর। গত ২৮ দিনে সেখানে ৩২ হাজারেও বেশি মানুষ করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন। এসব খবর ছাপিয়ে নতুন খবরে আশঙ্কা বিশ্ববাসীর। মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে করোনায় ইউরোপে মৃত্যু হতে পারে ৭ লাখ মানুষের। এমনই আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু ।
সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইউরোপে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়া নিয়ে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গত শনিবার সংবাদমাধ্যম বিসিসিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক কর্ণধার বলেন, ইউরোপে করোনার সংক্রমণ নিয়ে তারা বিশেষ চিন্তিত।
হু-র আশঙ্কা, দৈনিক মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ২০০–তে দাঁড়িয়েছে, যা গত সেপ্টেম্বর মাসের দৈনিক মৃত্যুর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। অপরদিকে যুক্তরাজ্যসহ গোটা ইউরোপে মোট মৃত্যু ইতিমধ্যে ১৫ লাখ ছাড়িয়েছে।
ইউরোগের করোনা পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত ভয়াবহ’ আখ্যা দিয়েছে হু। হু এর মতে, ইউরোপের ৫৩টি দেশের মধ্যে ২৫টি দেশেই করোনা পরিস্থিতি ‘অতিরিক্ত উদ্বেগজনক’। এইরকম চলতে থাকলে আগামী বছরের মার্চের শুরুতে মোট মৃতের সংখ্যা ৭ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
ইউরোপের ও পূর্ব ইউরোপের দিকে ভ্যাকসিনের প্রতি তীব্র অনীহা রয়েছে। সেই কারণে এখানে করোনার প্রকোপ বেড়েছে। একইসঙ্গে মাস্ক নিয়ে অনীহাও দেখা যাচ্ছে।
ইউরোপ আবার মহামারির কেন্দ্রে পরিণত। অস্ট্রিয়া এই সপ্তাহের শুরুতে ফের লকডাউন প্রয়োগ করেছে । করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর দেশটি এই নিয়ে চতুর্থ বার লকডাউন ঘোষণা করল। আগামী ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত নতুন লকডাউন কার্যকর থাকবে। গত সপ্তাহে করোনার টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করে আইন পাস করেছে অস্ট্রিয়া। ফেব্রুয়ারি থেকে আইনটি কার্যকরের কথা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হল ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের লাগামছাড়া সংক্রমণ। হুর আশঙ্কা, গ্রীষ্মকাল থেকে মাস্ক পরা এবং শারীরিক দূরত্বের মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলো শিথিল হয়ে পড়ায় সংক্রমণ বেড়েছে। শীতের শেষে আর শরতে ইউরোপে বাড়িতে বেশি সংখ্যক ছোট-বড় জমায়েত হয়েছে। এদিকে জনসংখ্যা একটা বড় অংশেরএখনও টিকা দেওয়া হয়নি । তাই ঝুঁকি বাড়ছে।