২২ লাখের বেশি শিক্ষার্থী বসেছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায়

সারাদেশে আজ থেকে এক যোগে শুরু হয়েছে এবারের মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা। এর মাধ্যমে দেড় বছর পর প্রথম কোনো পাবলিক পরীক্ষায় বসলো শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষা শেষ হবে ২৩ নভেম্বর। মহামারি করোনার কারণে দীর্ঘ বিরতির পর স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে এই পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এজন্য কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

সময়সূচি অনুযায়ী পরীক্ষা হবে দুই শিফটে। সকাল ১০টায় সকালের শিফটের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। দেড় ঘণ্টার পরীক্ষা শেষ হবে বেলা সাড়ে ১১টায়। এছাড়া বিকালের শিফটের পরীক্ষা বেলা ২টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। করোনা মহামারির মধ্যে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়া শেষে ৩০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে।

শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০২১ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেবে মোট ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে এসএসসিতে ১৮ লাখ ৯৯৮ জন, দাখিলে তিন লাখ এক হাজার ৮৮৭ জন এবং ভোকেশনালে এক লাখ ২৪ হাজার ২২৮ জন রয়েছে।

বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২৯ হাজার ৩৫টি। সারা দেশে মোট ৩ হাজার ৬৭৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে। গতবারের তুলনায় এবছর পরীক্ষার্থী বেড়েছে এক লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন। এবার প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ১৫১টি এবং কেন্দ্র বেড়েছে ১৬৭টি। বৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এবার একজন শিক্ষার্থীকে নৈর্বাচনিক তিনটি বিষয়ের পরীক্ষা দিতে হবে। আবশ্যিক পরীক্ষা এই বছর হবে না। সূচিতে প্রকাশিত বিষয়গুলোর মধ্যে যার যে নৈর্বাচনিক বিষয় রয়েছে সে ওই বিষয়ের পরীক্ষা দেবে। তবে একজনকে নৈর্বাচনিক তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। বাংলা, ইংরেজির মতো আবশ্যিক বিষয়গুলোতে এবার পরীক্ষা না নিয়ে আগের পাবলিক পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে।

ঢাকার কেন্দ্রগুলোর দায়িত্বশীলরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে কেন্দ্রে হাত জীবাণুমুক্ত করা ও তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাখা হয়েছে আইসোলেশন রুমও। কেন্দ্র এলাকায় অভিভাবকদের বাড়তি চাপও নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষার্থী ও কেন্দ্রের কর্মী ছাড়া অন্য কাউকে পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের ভেতরে প্রবেশ করতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। এর আগে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি অভিভাবকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

কোন পরীক্ষা কবে

১৪ নভেম্বর পদার্থবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়), ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা ও হিসাববিজ্ঞান এবং ১৬ নভেম্বর রসায়ন (তত্ত্বীয়), ১৮ নভেম্বর শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া (তত্ত্বীয়), ২১ নভেম্বর ভূগোল ও পরিবেশ ও ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

২২ নভেম্বর উচ্চতর গণিত (তত্ত্বীয়) ও জীব বিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) এবং ২৩ নভেম্বর পৌরনীতি ও নাগরিকতা, অর্থনীতি ও ব্যবসায় উদ্যোগ পরীক্ষা হবে।

মানতে হবে যেসব নিয়ম

পরীক্ষা যথাযথভাবে অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পরীক্ষার্থী ও দায়িত্বশীলদের বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে রয়েছে- পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে; ‘অনিবার্য কারণে’ কোনো পরীক্ষার্থীকে এর পরেও হলে প্রবেশ করতে দিলে তাদের নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্ব হওয়ার কারণ একটি রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করে ওই দিনই শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে; ট্রেজারি থেকে নির্দিষ্ট তারিখের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সকল সেট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে।

ট্রেজারি থেকে প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নির্ধারিত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে; পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে এসএমএসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের প্রশ্নপত্রের সেট কোড জানিয়ে দেওয়া হবে; কেন্দ্র সচিব ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। শুধু কেন্দ্র সচিব মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন, তবে ‘ছবি তোলা যায় না’- এমন ফোনই তিনি ব্যবহার করবেন; পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না; সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।