শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেছেন, অনেক সময় বিরোধী দলের নেতারা বলেন ক্রসফায়ার দিয়ে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। কিন্তু আমি ক্রসফায়ারের পক্ষে। একজন সন্ত্রাসীর জন্য লাখ লাখ মানুষের রাতের ঘুম নষ্ট হয়। এদের কারণেই সৃষ্টি হচ্ছে কিশোর গ্যাং। এই সন্ত্রাসীর বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। তাকে ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলা উচিত। শনিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর রূপনগরে মনিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ মিলনায়তনে কিশোর অপরাধ নির্মূলে জনসচেতনতামূলক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ বক্তব্য দেন। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৪) এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজেরা জনপ্রতিনিধি হয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়ার আগে নানা বাহিনীর রিপোর্ট নেওয়া হয়। তবে কেন সন্ত্রাসীরা মনোনয়ন পাবেন? সেটি বন্ধ করতে হবে।
হাইকোর্টের নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকেরা বেত চালাতে পারবেন না—এ-সংক্রান্ত হাইকোর্টের নির্দেশনাটি যথার্থ নয় বলেও তিনি মনে করেন। শিক্ষার্থীরা অন্যায় করলে শাসন করতে হবে। সেই অধিকার শিক্ষকদের রয়েছে। সে কারণে শাসন করার অধিকার শিক্ষকদের দেওয়া উচিত।
কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, দেশে যত প্রযুক্তি ঢুকছে, এতে যেমন দেশের সুফলও হচ্ছে; ক্ষতিও হচ্ছে। এর অপব্যবহার রোধ করা না গেলে কিশোর-যুবসমাজকে ধ্বংস থেকে ফিরিয়ে আনা যাবে না। এ জন্য শুধু শিক্ষার্থীদের নয়, অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে।
মন্ত্রীর বক্তব্যের আগে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন র্যাব-৪-এর অধিনায়ক, অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক হিসাব অনুযায়ী ১২ থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত কিশোর বয়স ধরা হয়। গত এক বছরে রাজধানীতে বেশ কিছু কিশোর গ্যাং গ্রুপ সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন অপরাধের কারণে র্যাব-৪ এ পর্যন্ত ২৭৪ কিশোরকে আটক করে। এদের মধ্যে ৪০ জনকে অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ডিআইজি বলেন, সমাজব্যবস্থা ও খারাপ সঙ্গের কারণে কিশোর বয়সের ছেলেমেয়েরা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। এ জন্য যার যার অবস্থান থেকে সচেতন থাকতে হবে। বিশেষ করে পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কিশোর-কিশোরীদের সচেতন থাকতে হবে।
আলোচনা সভায় মনিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ, প্রফেসর ড. মো. আবু মাসুদ প্রমুখ।