ইন্টারনেট ছাড়াই মোবাইল ফোনে ফেসবুক-মেসেঞ্জার সেবা মিলবে। ইন্টারনেট ব্যালান্স শেষ হয়ে গেলেও গ্রাহকরা ফেসবুক-মেসেঞ্জারে লিখিত বার্তা পাঠাতে বা পড়তে পারবে। তবে ছবি বা ভিডিও দেখা বা আপলোড করা যাবে না।
গতকাল টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিতে এক আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ওই সেবা উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এই সেবা আপাতত শুধু গ্রামীণফোনের গ্রাহকরা উপভোগ করতে পারবে বলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়। মোবাইল ফোন অপারেটর রবি ও বাংলালিংকও এই সেবা চালুর প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, এর আগে মোবাইল ফোন অপারেটররা তাদের গ্রাহকদের জন্য ‘ফ্রি ফেসবুক’ সেবা চালু করেছিল। মোবাইল অপারেটর রবি ২০১৫ সালে এই সেবা চালু করে। গ্রামীণফোন ১১০ টাকায় ১৭৫ মিনিট টক টাইমের সঙ্গে এক গিগাবাইট ফেসবুক ডাটা বিনা মূল্যে দিত। বিটিআরসির নির্দেশে ২০২০ সালের ১৫ জুলাই ওই সেবা বন্ধ করা হয়। সে সময় গ্রামীণফোন জানায়, ১১০ টাকায় ১৭৫ মিনিটের সঙ্গে এক গিগাবাইট ফেসবুক ডাটা বিনা মূল্যে ছিল।
এ ছাড়া সে সময় রবির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘ফেসবুকসংক্রান্ত যাবতীয় ফ্রি অফার বন্ধে যে নির্দেশনা বিটিআরসি দিয়েছে, আমরা মনে করি তা অবশ্যম্ভাবী ছিল। কারণ ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের নির্দেশনা অনুসারে, একটি কম্পানির প্রমোশনাল ব্যয়ের পরিমাণ তার মোট আয়ের ০.৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। এই নির্দেশনা অনুসারে ফ্রি অফারকেন্দ্রিক কোনো ব্যয় নির্বাহ করা আমাদের মতো কম্পানির জন্য স্বাভাবিকভাবেই কঠিন।’
গতকাল সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে গত বছর ‘ফ্রি ফেসবুক’ বন্ধের বিষয়টি জানতে চাইলে কোনো জবাব মেলেনি। অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের গ্রাহকদের জন্য মেটার (ফেসবুক) সঙ্গে পার্টনারশিপে টেক্সট-অনলি ফেসবুক ও ডিসকভার সেবার উন্মোচন করা হয়। বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান এবং মেটা ও অপারেটরদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী বলেন, ‘আমি দেখেছি, করোনার সময় মোবাইল সেবাদাতারা ব্যাবসায়িক উদ্দেশ্যের বাইরে এসে সমাজে সম্মিলিতভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করার মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক কার্যক্রম চালু রাখতে সহায়তা করছে। ইন্টারনেট ছাড়া ফেসবুক ব্যবহার একটি অসাধারণ উদ্যোগ। প্রান্তিক জনগণের তথ্য আদান-প্রদান এবং কালেক্টিভিটি নিশ্চিত করে ডিজিটাল ডিভাইড কমাতে এটি সহায়তা করবে।’
বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, ‘সরকার সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষকে ডিজিটাল কানেক্টিভিটির আওতাভুক্ত করার ওপর জোর দিয়ে আসছে। কিন্তু একে বাস্তবে পরিণত করতে বেসরকারি খাত, বিশেষ করে এমএনওগুলোকে নিজেদের থেকে সামনে এগিয়ে আসতে হবে।’