২০ বছর পর টাঙ্গাইলের শাহনাজকে খুঁজে পেল পরিবার

২০ বছর পর টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার জিগাতলা গ্রামের আবু সাঈদের মেয়ে হারিয়ে যাওয়া শাহনাজকে খুঁজে পেল তার পরিবার। জানা যায়, ৫ বছর বয়সে শাহনাজের মা-বাবার বিচ্ছেন ঘটে।

এরপর তার বাবা আরেকটি বিয়ে করেন। বিয়ের পর শাহনাজের সৎমা তাকে নিয়ে যেতে চান। কিন্তু পরিবারের কেউই রাজি ছিল না। পরে একটি পরিবারের কাছে শাহনাজকে দেওয়া হয় লালনপালন করার জন্য।

একদিন সেই পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় বেড়াতে গিয়ে শাহনাজ হারিয়ে যায়। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তখন ঢাকার তেজগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন শাহনাজের বাবা।

শাহনাজের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ রায়হান বলেন, সম্প্রতি রেডিও উপস্থাপক আর জে কিবরিয়ার ‘আপন ঠিকানা’ নামের একটি অনুষ্ঠানে শাহনাজকে নিয়ে একটা প্রোগ্রাম করা হয়। সেই ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। পরে জিগাতলা গ্রামের প্রবাসী জুয়েল ভিডিওটি দেখে খবর দেন। পরিচয় ও হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা মিলে যাওয়ায় তাকে আনতে ঢাকা যাই। ১৯ জুন স্বামী-সন্তানসহ শাহনাজকে ফিরে পাই।

শাহনাজ বলেন, মা-বাবার বিচ্ছেদের পর পাঁচ বছর বয়সে আমাকে টাঙ্গাইলের একটি পরিবারের কাছে লালনপালন করার জন্য দেওয়া হয়। ওই পরিবার ঢাকায় নিয়ে যায়। তাদের বাসায় দুই বছর থাকার পর একদিন হারিয়ে যাই। এরপর ঢাকার খিলগাঁও বাসাবোর কদমতলা এলাকার মাশুক আহমেদ আমাকে পেয়ে তার বাসায় নেন। সেখানেই বড় হই। তারা আমাকে মেয়ের মতো করেই বড় করেছেন।

তিনি বলেন, তারা আমাকে নওগাঁর আব্দুর কাদেরের সঙ্গে বিয়ে দেন। স্বামী বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার। টেক্সটাইলস কোম্পানিতে চাকরি করছে। এদিকে আমার স্বামীও আমার পরিবারকে খুঁজে পাওয়ার বিষয়ে আন্তরিক ছিল। পরে ‘আপন ঠিকানা’ প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমার পরিবারকে খুঁজে পাই।

শাহনাজ বলেন, ২০ বছর পর পরিবারকে খুঁজে পাব, সেটা ভাবতে পারিনি। আল্লাহ আমাদের মিলিয়ে দিয়েছেন। আমার শ্বশুর-শাশুড়ি অনেক ভালো মনের মানুষ। তারা আমাকে নিজের মেয়ের মতোই আদর-যত্ন করেন।

শাহনাজের দেড় বছরের সন্তান নিয়ে পরিবারের সঙ্গে বেশ আনন্দে সময় কাটাচ্ছেন। তার ফুটফুটে শিশুসন্তানকে আদর করছেন তার চাচা, ভাই ও ভাতিজারাসহ অনেকেই। এদিকে এত বছর পর বাড়িতে ফিরে আসায় তাকে দেখতে বাড়িতে ভিড় করছে গ্রামের মানুষ।

শাহনাজের চাচা তোজাম্মেল হক বলেন, পাঁচ বছর বয়সে হারিয়ে যাওয়া শাহনাজকে আমরা ফিরে পেয়েছি। দীর্ঘ ২০ বছর পর শাহনাজ যেমন পরিবার পেয়ে খুশি, আমরাও তাকে পেয়ে অনেক খুশি।