এতিম শিশুদের বুকে নিয়ে কাঁদলেন ডিসি

এতিমের দায়িত্ব গ্রহণে ম’র্যাদা ও নির্দেশনা স’ম্পর্কিত আয়াতগুলো পবিত্র কোরআনে অনেক। এক আয়াতে এসেছে, ‘তারা তোমাকে এতিম স’ম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, তাদের ইসলাহ তথা সুব্যবস্থা (পুনর্বাসন) করা উত্তম…।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২২০)

অর্থাৎ আপনি যদি তাদের উন্নয়নে কল্যাণমূলক কিছু করতে চান, তাহলে তাদের ইসলাহ তথা সার্বিক দেখভালের সুব্যবস্থা করুন। যারা এতিমের প্রতি অবিচার করে, আল্লাহ তাআলা তাদের ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘অসম্ভব, (কখনোই নয়) বরং তোম’রা এতিমের সম্মান রক্ষা করো না।’

নতুন খবর হচ্ছে, জে’লা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে সরকারি দায়িত্ব পালনের জন্য এসেছিলেন তিনি। মেয়াদ ছিল দুই বছর। এর মধ্যেই কর্মগুণে তিনি স্থান করে নিয়েছেন নাটোরবাসীর অন্তরে।

তিনি নাটোরের বিদায়ী জে’লা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ। তাই তো তার বিদায়ের আদেশ হয়েছে জানার পর কাঁদছে নাটোরবাসী। আর সেই কা’ন্না থেকে বাদ গেলো না নাটোরের এতিম শি’শুরাও।ওই শি’শুদের প্রতি মমত্বে কাঁদলেন জে’লা প্রশাসকও।

জে’লা প্রশাসক হিসেবে মো. শাহরিয়াজ নাটোরে আসার পর অল্প কিছুদিনেই নাটোরবাসীর হৃদয়ে স্থান করে নেন। যখনি কোথাও কোনও সংকট দেখেছেন তিনি ছুটে গেছেন। পাশে দাঁড়িয়েছেন সবার বিপদ-আপদে। চলমান এই করো’নাকালে সরকারি ত্রাণ সঠিকভাবে বণ্টন থেকে শুরু করে সব কাজে তিনি ছিলেন সাধারণ মানুষের পাশে।

এরই ধারাবাহিকতায় সাবেক জে’লা প্রশাসক শাহিনা খাতুনের পথ ধরে তিনিও আপন হয়ে ওঠেন জে’লার দিঘাপতিয়া বালিকা শি’শুসদনের এতিম শি’শুদের কাছেও। প্রায়ই ছুটে যেতেন তিনি ওই এতিম’দের কাছে। ভালোবাসায়-মমত্বে ভুলিয়ে রাখতেন এতিম শি’শুদের, ঠিক যেন বাবার মতো।

সরকারি আদেশ অনুযায়ী জে’লা প্রশাসক শাহরিয়ার নাটোর ছেড়ে চলে যাবেন মঙ্গলবার। তাই নাটোরের বিভিন্ন সংগঠন আর প্রতিষ্ঠান তাকে বিদায় দিচ্ছে অশ্রুসিক্ত নয়নে। কিন্তু শেষ সময়ে হঠাৎ সোমবার বিকালে তিনি উপস্থিত হন দিঘাপতিয়া বালিকা শি’শুসদনে। শি’শুরা আগেই জেনেছিল তার বদলির খবর। তখন থেকেই তাদের মন ছিল খা’রাপ।

এমন অবস্থায় হঠাৎ জে’লা প্রশাসকের উপস্থিতিতে ছুটে আসে এতিম শি’শুরা। আবেগে-পিতৃস্নেহে তাদের জড়িয়ে ধরেন জে’লা প্রশাসক। সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ। শি’শুদের জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন জে’লা প্রশাসক। অশ্রু ঝরতে থাকে শি’শুদেরও।