কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক ৪ মাস ২৬ দিন পর খোলা হয়েছে। এ মসজিদটিতে আটটি লোহার দান সিন্দুক রয়েছে। প্রতি তিন মাস পরপর এ সিন্দুকগুলো খোলা হয়। কিন্তু করোনার কারণে প্রায় পাঁচ মাস পর শনিবার (১৯ জুন) দান সিন্দুকগুলো খোলা হয়েছে। সিন্দুকগুলোতে পাওয়া গেছে ২ কোটি ৩৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭৯ টাকা।
সর্বশেষ গত ২৩ জানুয়ারি দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিলো। সে সময় দানবাক্স খুলে পাওয়া গিয়েছিলো ২ কোটি ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার ৫৪৫ টাকা। তাছাড়া বরাবরের মতো এবারও পাওয়া গেছে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণাংলকার।
শনিবার সকাল ৯টা থেকে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদা ইয়াসমিন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলহাস হোসেন সৌরভ, মাহমুদুল হাসান, মো. ইব্রাহিম, মো. উবাইদুর রহমান সোহেল, পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা মো: শওকতউদ্দিন ভুঁইয়া প্রমুখের তত্ত্বাবধানে প্রথমে মসজিদ প্রাঙ্গণে রক্ষিত সিন্দুকগুলো খোলা হয়।
পরে টাকা বাছাইয়ের কাজ শুরু হয় এবং বাছাইয়ের পর বিকাল পর্যন্ত টাকা গণনার কাজ চলে। মসজিদ সংলগ্ন মাদ্রাসার ছাত্র, শিক্ষক, মসজিদ কমিটির লোকজন টাকা বাছাইয়ের পর টাকাগুলো বস্তায় ভরেন। পরে রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ টাকাগুলো গুনে বুঝে নেন। পাগলা মসজিদের নামে রূপালী ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট আছে। প্রতিবারই সিন্দুক খোলার পর প্রাপ্ত টাকা গণনা করে রূপালী ব্যাংকের হিসাবে জমা দেয়া হয়।
জেলা শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে স্থাপিত দুই শতাব্দী প্রাচীন মসজিদটি দেশজুড়ে পরিচিত। ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদকে ঘিরে রয়েছে অনেক জনশ্রুতি। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মুসলমান এই মসজিদে আসে। তারা দান ও মানত করে যায়। তাছাড়া প্রতিদিনই লোকজন গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি প্রভৃতিও নিয়ে আসে। ওইগুলো বিক্রি করে মসজিদের ফান্ডে জমা দেয়া হয়। অন্য সম্প্রদায়ের লোকজনও এই মসজিদে এসে দান ও মানত করেন।
পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা মো: শওকত উদ্দিন ভুঁইয়া জানান, পাগলা মসজিদের ফান্ড থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণমূলক কাজে অর্থ বরাদ্দ করা হয়ে থাকে। তাছাড়া জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য অর্থ অনুদান দেয়া ছাড়াও বিভিন্ন সেবামূলক কাজে অর্থ বরাদ্দ করা হয়ে থাকে।