ছেলেরা আলাদা করে দিয়েছে, তাই গোয়াল ঘরে জীবনযাপন বৃদ্ধার!

চ’রম দরিদ্রতায় ঘর না থা’কায় বাধ্য হয়ে গরুর সঙ্গে গো’য়াল ঘরেই বসবাস করতে হচ্ছে আ’শিরও বেশি বয়স্ক এই বৃ’দ্ধাকে। অ’ভাবের তা’ড়নায় অন্য ছে’লেরা আলাদা করে দি’য়েছেন তার বৃদ্ধা মাকে। কাঠমিস্ত্রি ছোট ছে’লের কাজ জু’টলে পেটে খা’বার পড়ে, অন্যথায় নয়! এমন পু’রিস্থিতিতে ক’খনো কখনো তাকে উ’পবাস বা একবেলা খা’বার খেয়ে দিন কা’টাতে হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃ’দ্ধার স্বামী সুধীর চন্দ্র সরকার অ’সুস্থতা জ’নিত কারণে প্রায় ৩০ বছর আগে মা’রা গি’য়েছিলেন।

নি’জের থাকার ঘরের একদিকে বি’ছানা অন্যদিকে খড় বি’ছানো গরুর থাকার জায়গা। এভাবেই শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা পার করছেন তিনি। তার ৩ ছে’লে ও ১ মেয়ে রয়েছে। সবার বিয়ে হলেও শুধুমাত্র ছোট ছেলে এখনও অ’বিবাহিত। নিজের কোন জা’য়গা জমি নেই বললেই চলে। মাত্র তিন শতক জ’মিতে ভিটেমাটি। তাও অর্ধেকে থাকেন তার বড় ছে’লে বাকি অংশে থা’কেন শান্তি রাণী। অন্যদিকে এই বৃ’দ্ধার ঘরের সাথেই কোন এক কোনে থাকেন ছোট ছে’লে।

স্বামী মা’রা যাওয়ার পর একটা সময়ে মা’নুষের বাড়িতে কাজ করলেও এখন বয়সের ভা’রে আর কু’লিয়ে উঠতে পারছেন না তিনি। ফলে তার সন্তান এবং প্রতিবেশিদের উপর নি’র্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। চলাফেরা করতে পারলেও প’রিশ্রম করতে পারেন না। গরু পালন করে দেওয়ার শর্তে মা’নুষের কাছ থেকে ১টি গরু পেয়েছিলেন তিনি। এখন ওই গ’রুটিই তার একমাত্র সম্বল। জ’রাজীর্ণ ঘরে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় গরুর গো’য়াল তৈরি করতে পারেননি। ফলে বাধ্য হয়ে নিজ ঘরেই গরুসহ দিন পার করছেন শান্তি রাণী।

শু’ক্রবার (১৫ জানুয়ারি) স’রেজমিনে কথা হলে কা’ন্না জ’ড়িত কন্ঠে শান্তি রাণী ব’লেন, ‘এই মতন করি গরু নিয়াই থাকি। খাওয়া দাওয়া এই মতন। ছে’লে দিন’মজুরি খাটে, দিন যায় আনে খাই, না আনলে না খাই। থাকি ওই মতনে। কাইও (কেউ) যদি এ’কমুট দেয় তাইলে খাই আর না দিলে অ’মনে (না খেয়ে) থাকি। ১টা গরু আদি নিছনু সেটা থাকি বা’ছুর হইছে। গাই কোনা ঘো’রত দিছং।

আর বা’ছুরটাকে এমন করি বড় ক’রবাইছি (পালন করছেন)। ছইল পৈ’লকে বিয়া দিতে সউগ শ্যাষ হইছে। এলা বে’টারা যুদা (আলাদা) খায়। এলা হাম’রা মা-ছোট বেটা মিলে খায়া না খায়া দিন কা’টাই। কু’ড়িগ্রামের রাজারহাটে উপজে’লার চা’কিরপশার ইউনিয়নের মালিরপাড় গ্রামের বা’সিন্দা তিনি। এই বৃদ্ধার প্র’তিবেশী গীতা রাণী বলেন, বৃষ্টি আসলে শান্তি রা’ণীর খুবই ক’ষ্ট হয়। আ’মরা তাকে অনেক ক’ষ্ট করতে দেখি।

ক’য়েকদিন আগে বর্ষায় উল্টে পড়ে তার হাত ভেঙ্গে যায়। টাকার অ’ভাবে চিকিৎসা করাতে পারেননি। এ বিষয়ে রা’জারহাট চাকিরপশার ইউপি সদস্য সন্তোষ চন্দ্র মোহন্ত বলেন, স’রকারি বিধি মোতাবেক একই পরিবারকে অন্যদের সু’যোগ দেয়ার নিয়ম নেই। তবু তার ক’ষ্টের কথা স্থানীয় প্র’শাসনকে জানানো হয়েছে। রাজারহাট উপজে’লা নির্বাহী কর্মক’র্তা নূরে তাসনিম শান্তি রানীর ব্যাপারে বলেন, আপনার মাধ্যমে জানতে পা’রলাম। খোঁজ খবর নিয়ে তাকে সরকারি সুযোগ সু’বিধা দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।