লকডাউনে কর্মহীনদের খাদ্য ও নগদ অর্থ সহায়তা প্রদানের দাবিতে বরিশালে সংবাদ সম্মেলন করেছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে নগরীর ফকির বাড়ি সড়কের সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কার্যালয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন স্কপের জেলার সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এ কে আজাদ।
তিনি বলেন, করোনা মহামারিতে প্রথম দফার লকডাউন শেষে গত ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দেয়া হলেও কোনো রকম স্বা’স্থ্যসুরক্ষা ছাড়াই গার্মেন্টসসহ শিল্প-কারখানা চালু রাখা হয়েছে। আর দেশের শ্রমশক্তির ৮৫ শতাংশ মানুষ কিভাবে বেঁচে থাকবে তার নির্দেশনা দেয়া হয়নি। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশ’ঙ্কায় শ্রমজীবী মানুষ জীবনের ঝুঁ’কি নিয়ে গ্রামে ছুটে যাচ্ছেন।
অ্যাডভোকেট এ কে আজাদ বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় চি’কি’ৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ১৮ কোটি মানুষের জন্য ৬৫৪ সরকারি হাসপাতালে বেড সংখ্যা মাত্র ৫১ হাজার ৩১৬। দেশে মাত্র ৪৩২ আইসিউ বেড রয়েছে। সারা দেশে বেড-অক্সিজেন ও আইসিইউর জন্য হাহাকার চলছে।
ডাক্তার-নার্স ও ‘স্বা’স্থ্যকর্মীদের তীব্র সংকট তো রয়েছেই। দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর বহু মানুষ বিনা চি’কিৎ’সায় মা’রা যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী ডাক্তার-নার্স, স্বা’স্থ্যকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সদস্যদের জন্য ইন্স্যুরেন্স ঘোষণা দেন। করোনায় আ’ক্রা’ন্ত হলে তাদের চি’কিৎ’সায় ৫-১০ লাখ টাকা ও
মা’রা গেলে ৫ গুণ বৃদ্ধি করে ২৫-৫০ লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। অথচ যে শ্রমজীবী মানুষের পরিশ্রমে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকে, সেই মানুষরা করোনাভাইরাসে আ’ক্রা’ন্ত হলে তাদের চি’কিৎ’সার জন্য কোনো বরাদ্দ নেই।
তিনি বলেন, লকডাউনকালীন সময়ে প্রতি মাসে কর্মহীন মানুষদের চাল, ডাল, তেল, আলু, চিনি লবণসহ খাদ্য ও নগদ পাঁচহাজার টাকা প্রদান করা ও স্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে রেশনিং চালু করা, বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষা, চি’কি’ৎসা, ভ্যাকসিন, দেশের সকল
হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সেন্ট্রাল অক্সিজেন বেড ও আইসিইউ বেড স্থাপন করা, শিল্প কারখানায় যারা জীবনের ঝুঁ’কি নিয়ে কাজ করছে তাদের স্বা’স্থ্য সুরক্ষা দেয়া, বন্ধ ও স্বল্প পরিসরে চালু প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস প্রদানের ব্যবস্থা করা ও শ্রমজীবী মানুষের জন্য বীমা সুবিধা প্রদান করার দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এসএম জাকির হোসেন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি ইমরান হাবিব রুমন, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক
ফ্রন্টের উপদেষ্টা ডা. মনীষা চক্রবর্তী, হকার্স শ্রমিক ইউনিয়নের মো. সাইদ মোল্লা, জাহাঙ্গীর কবির মুকুল, দর্জি শ্রমিক ইউনিয়নের লিপিকা মজুমদার ও তুষার সেন।