চাঁদ দেখা গেছে, রোজা শুরু কাল

১৪৪২ হিজরি সনের পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল বুধবার থেকে ‍শুরু হচ্ছে রোজা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।

চাঁদ দেখা যাওয়ায় আজ রাত থেকেই শুরু হচ্ছে রোজার আনুষ্ঠানিকতা। এশার নামাজের পর তারাবি পড়বেন রোজাদাররা। শেষ রাতে সেহেরি খেয়ে রোজা রাখবেন তারা।

তবে করোনা মহামারি কারণে অনেকটা ঘরবন্দি অবস্থায় এবার শুরু হচ্ছে রোজা। আগামীকাল থেকে সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হচ্ছে। ফলে ওয়াক্তের নামাজসহ তারাবির জামাতে ২০ জনের বেশি মুসল্লি অংশগ্রহণে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। ফলে গতবারের মতোই সাধারণ মুসল্লিরা তারাবিতে অংশ নিতে পারছেন না।

রমজানের নতুন চাঁদ দেখেই যে দোয়া পড়তে বলেছেন বিশ্বনবি

রমজানের নতুন চাঁদের অনুসন্ধান প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অন্যতম সুন্নাত। এ সুন্নাত থেকে আজ মুসলিম উম্মাহ প্রায়ই উদাসীন। অথচ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাসের ২৯ তারিখ সন্ধ্যায় নিজে রমজানের চাঁদের অনুসন্ধান করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে চাঁদ দেখতে বলতেন। রমজানের নতুন চাঁদ দেখলে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কল্যাণ ও বরকতের দোয়া করতেন। হাদিসের বর্ণনা থেকে তা প্রমাণিত।

তাই ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় (২৯ শাবান) রমজানের নতুন চাঁদ দেখার সঙ্গে সঙ্গেই মুমিন মুসলমান প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাতের অনুসরণ ও অনুকরণে এ দোয়া পড়বেন। কল্যাণের প্রার্থনা করবেন এভাবে-
হজরত তালহা ইবনে ওবায়দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন নতুন চাঁদ দেখতেন তখন বলতেন-
اَللهُ اَكْبَرُ اَللَّهُمَّ أَهِلَّهُ عَلَيْنَا بِالْأَمْنِ وَ الْاِيْمَانِ وَالسَّلَامَةِ وَ الْاِسْلَامِ وَ التَّوْفِيْقِ لِمَا تُحِبُّ وَ تَرْضَى رَبُّنَا وَ رَبُّكَ الله

উচ্চারণ : আল্লাহু আকবার, আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ঈমানি ওয়াস্সালামাতি ওয়াল ইসলামি ওয়াত্‌তাওফিকি লিমা তুহিব্বু ওয়া তারদা রাব্বুনা ওয়া রাব্বুকাল্লাহ।

অর্থ : আল্লাহ মহান, হে আল্লাহ! এ নতুন চাঁদকে আমাদের নিরাপত্তা, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সঙ্গে উদয় কর। আর তুমি যা ভালোবাস এবং যাতে তুমি সন্তুষ্ট হও, সেটাই আমাদের তাওফিক দাও। আল্লাহ তোমাদের এবং আমাদের প্রতিপালক।’ (তিরমিজি, মিশকাত)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রজব মাস থেকে রমজান পর্যন্ত হায়াত পেতে আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন। শাবান মাসজুড়ে বেশি বেশি রোজা রাখতেন এবং রমজানের জন্য ব্যকুল থাকতেন। তিনি শাবান মাসে চাঁদের হিসাব রাখতে দিন গণনা করতেন। আর রমজানের নতুন চাঁদ দেখার জন্য অপেক্ষা করতেন। হাদিসে এসেছে-

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাসের চাঁদের হিসাব যেভাবে রাখতেন অন্য কোনো মাসের হিসাব সেভাবে রাখতেন না। পরে চাঁদ দেখে রোজা রাখতেন।’ (মুসনাদে আহমদ)

১৩ এপ্রিল শাবান মাসের ২৯ তারিখ। সন্ধ্যায় চাঁদের অনুসন্ধান করে সুন্নাত আদায় করা মুমিন মুসলমানের জন্য একান্ত করণীয়। রমজানের চাঁদ দেখা গেলে সুন্নাতের অনুসরণে দোয়া পড়ে রমজানের আমেজ নিয়ে রাতের (তারাবিহ) নামাজ আদায়ের প্রস্তুতি গ্রহণ করা জরুরি। আর ভোর রাতে সাহরি খাওয়ার মাধ্যমে শুরু করবে রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাতের মাস রমজান।